বিদেশ থেকে ভুট্টা ও চিনি আমদানি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন স্বারকলিপি পেশ

 

চুয়াডাঙ্গায় সরকার ঘোষিত বোরো ধানের মল্য পুনর্নির্ধারজাতীয় মল্য কমিশন গঠন

 

ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: সরকার ঘোষিত বোরো ধানের মূল্য পুননির্র্ধারণ, কৃষক ও ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় কৃষি পণ্যের জাতীয় মূল্য কমিশন গঠন এবং বিদেশ থেকে চিনি ও ভুট্টা আমদানি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষিমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রীর নিকট স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে কর্মজীবী নারী, অক্সফাম, গ্রো ও সিএসআরএল’র সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি জনমূল্য কমিশন ও পল্লী উন্নয়ন সংস্থা (পাস) এ কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা কৃষি জনমূল্য কমিশনের সহসভাপতি আবু সুফিয়ান বিল্লালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা কৃষি জনমূল্য কমিশনের সচিব পল্লী উন্নয়ন সংস্থা (পাস)’র নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস হোসেন, সিডিএফ’র সম্পাদক প্রত্যাশার নির্বাহী পরিচালক বিল্লাল হোসেন, জেলা কৃষি জনমূল্য কমিশনের সদস্য ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী জহির রায়হান, পাস পরিচালক কাতব আলী, সদস্য মকবুল হোসেন, সজল, উদীচী জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. নওশেদ আলী, রিসো’র প্রতিনিধি মামুন, কৃষক আব্দুল মালেক, রাজ্জাক আলী, শিপন, ইছাহাক, রমজান, মুকুল, ইউনুচ, গাফফার, ঠাণ্ডু প্রমুখ। বক্তাগণ বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে এফজিডি করে জানা যায় প্রতি কেজি ধান উৎপাদন করতে খরচ হয় ২৪ টাকা ৬০ পয়সা। কিন্তু সরকার কোনো চিন্তাভাবনা না করেই চলতি মরসুমে বোরো ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে কেজি প্রতি ২০ টাকা। যা দিয়ে কৃষকের লাভ তো দূরের কথা খরচের টাকায় উঠবে না। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্র মতে গত মরসুমে জেলায় বোরো ধানের চাষ হয়েছিলো ৩ লাখ ৭ হাজার ২৩০ হেক্টর জমি, চলতি মরসুমে বোরো ধানের চাষ হয়েছে ৩৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমি, যা গত বছরের তুলনায় ৪ হাজার ১৮০ হেক্টর জমি কম। গত দু বছরে জেলায় বোরো ধানের চাষ হ্রাস পেয়েছে ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। কিন্তু বাস্তবে আরও কম। এর ফলে দেশ খাদ্য নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব অর্জনে বাধাগ্রস্ত হবে। বক্তাগণ আরও বলেন, কয়েক মাস আগে ও ভুট্টা বিক্রি হচ্ছিলো ৯শ থেকে ৯৭০ টাকা মণ। ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ ভুট্টা আমদানির ফলে বর্তমান বাজারে ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৬শ থেকে ৬শ ৫০ টাকায়। ভরা মরসুমে ভুট্টার দাম আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কায় কৃষকেরা দিশেহারা। যা বিক্রি করে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠবে না। দর্শনার চিনি মিলটি দেশের বৃহত চিনি মিল। যার সাথে জড়িত প্রায় দেড় হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ১০ হাজার আখচাষি। আখের লাভজনক মূল্য না থাকায় কৃষকেরা আখচাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তাছাড়া এ বছর ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ কম দামে চিনি আমদানি করার কারণে দর্শনা চিনি মিলের চিনি অবিক্রিত হয়ে পড়েছে। ফলে এ বছর দর্শনা মিলটি ব্যাপক লোকশানের মুখে পড়বে। এর ফলে অনিশ্চিয়তার মুখে পড়বে মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে জেলার প্রায় ১০ হাজার কৃষক ও তাদের পরিবার। এ সময় কৃষকেরা সরকার কতৃক বোরো ধানের ঘোষিত মূল্য প্রত্যাক্ষান করে    সরকার কতৃক বোরো ধান ক্রয়ের ঘোষিত মূল্য পুনর্বিবেচনা করে লাভজনক মুল্য নির্ধারণ করা, সহজ শর্তে কৃষকের ঋনের ব্যবস্থা চালু করা, বিদেশ থেকে ভুট্টা ও চিনি আমদানি বন্ধ করে অবিলম্বে কৃষি পণ্যের জাতীয় মূল্য কমিশন গঠনের দাবি জানান। এরপর কৃষকেরা র‌্যালি সহকারে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কৃষিমন্ত্রী ও খাদ্য মন্ত্রীর নিকট স্বারকলিপি প্রদার্পণ করেন।

Leave a comment