নিজামীর মামলার রায় যেকোনো দিন

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় যেকোনো দিন ঘোষণা করা হবে। গতকাল সোমবার সার্বিক বিচারিক কার্যক্রম শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রেখে আদেশ দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীমের নেতৃত্বাধীন অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিচারিক কার্যক্রম শেষ হলো নিজামীর মামলার। এর আগে দু বার রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিলো। সোমবার যুক্তি উপস্থাপনকালে আসামিপক্ষের তোলা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (প্রসিকিউটর) মোহাম্মদ আলী। এরপর আসামিপক্ষ আইনগত বিষয়ে ফের যুক্তি উপস্থাপন করে। দুই পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রেখে আদেশ দেয়া হয়। আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন ‘মতিউর রহমান নিজামীর মামলার রায় যে কোনো দিন ঘোষণা করা হবে’।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দশম মামলা হিসেবে রায়ের জন্য অক্ষেমাণ রাখা হলো এটি। এর আগে তিনটি মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল-১, আর ট্রাইব্যুনাল-২ করেছেন ৬টি। নিজামী আসামির কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। আসামির বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উসকানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি অভিযোগ রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল থেকে বের হয়ে এসে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (প্রসকিউটর) মোহাম্মদ আলী বলেন, আসামিকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়ার মতো সব ধরনের উপাদান রয়েছে মামলাটিতে। আশা করি সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে আমরা ন্যায়বিচার পাব। এর আগে যুক্তি উপস্থাপনের শেষ পর্যায়ে আসামির সর্বোচ্চ সাজা চান মোহাম্মদ আলী।

আসামিপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের (ডিফেন্স টিম) মুখপাত্র অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষের একটি কল্পিত গল্প মাত্র। এর সাথে আইনের কোনো সম্পর্ক নেই। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে আসামিকে মুক্তি দেয়ার কোনো বিকল্প নেই।

যেভাবে এগোল মামলার বিচার প্রক্রিয়া: ২০১০ সালের ২৯ জুন মতিউর রহমান নিজামীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগের একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর জামায়াতের এ শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নেয়। ২০১২ সালের ২৮ মে ১৬টি অভিযোগে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে নিজামীর বিচার শুরু হয়। এরপর ২৬ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর শেষ হয়। তদন্ত কর্মকর্তাসহ এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে ৭ম সাক্ষী প্রদীপ কুমার দেবকে বৈরী ঘোষণা করে তাকে জেরা করেছে প্রসিকিউশন। অপরদিকে নিজামীর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন ছেলে নাজিব মোমেনসহ চারজন।