দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী শহিদুল ইসলামের সংবাদ সম্মেলন

 

 

ফলাফল গেজেটে প্রকাশ না করে পুনর্নির্বাচনের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদের পরাজিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে তার পরাজয়ের জন্য প্রিসাইডিং অফিসার মো. ইসমাইল হোসেনের পক্ষপাতদুষ্টতা ও স্থানীয় জামায়াত সমর্থিত জয়ী প্রার্থী মো. আব্দুল কাদেরের সমর্থকদের জালভোট প্রদান করাকে দায়ী করেছেন। শনিবার দুপুরে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তিনি এ কথা জানান। একই ইস্যুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এই আ.লীগ নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেছেন, ১৫ মার্চ দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। আমার প্রতীক ছিলো চশমা। নির্বাচনের দিন বেলা ১২টার পর থেকে আমার নির্বাচনী এজেন্ট ও এলাকার লোকমারফত জানতে পারি নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চন্দ্রবাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাতিভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চিৎলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম করে টিউবওয়েল প্রতীকের আব্দুল কাদেরের পক্ষে (জামায়াত) জালভোট দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানার পরপরই আমি সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্ত তার মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিকেলে নির্বাচন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্রে (কন্ট্রোলরুম) হাজির হই। আমি অন্যান্য কেন্দ্রে ব্যাপকভোটে এগিয়ে থাকলেও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারের যোগসাজসে ওই কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পাল্টে দিয়ে নতুনভাবে রেজাল্ট শিট তৈরি করে প্রায় দু ঘণ্টা পর প্রিসাইডিং অফিসার কন্ট্রোলরুমে হাজির হন এবং আমাকে কৌশলে পরাজিত করানো হয়েছে বলে আমার ধারণা হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোনো স্বদুত্তর দিতে পারেননি। পরদিন নাটুদা ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার ইসমাইল হোসেনের সাথে মোবাইলফোনে কথা বলে জানতে পারি বেলা ১২টার পর তাকে কে বা কারা তাকে জিম্মি করে রাখে এবং ওই কেন্দ্রের ১৪টি বুথেই ব্যাপক অনিয়ম করে জোর করে টিউবওয়েল প্রতীকে জালভোট দিয়ে ৯৬ ভাগ ভোটার তাদের ভোটারাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে দেখানো হয়। যা আদৌও সম্ভব নয়। প্রিসাইডিং অফিসার আরো বলেন, ওই কেন্দ্রের যে রেজাল্ট শিট জমা দেয়া হয়েছে সেটাও তার হাতের লেখা নয়। তাকে জোর করে রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়েছে। আমার সাথে ওই সমস্ত কথাগুলো বলার পর থেকে ওই প্রিসাইডিং অফিসার অদ্যবধি নিখোঁজ অবস্থায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাকে কারা হুমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করতে বলেছে এবং কেন তিনি আত্মগোপন করেছেন তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও ওই ভোটকেন্দ্রে জালভোট প্রদানকারী টিউবওয়েল প্রতীকের লোকজন তাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আত্মগোপন করতে বলেছে বলে লোকমারফত জানা গেছে। এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার অবগত থাকলেও এ সংক্রান্তে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সন্দেহের তীর সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দিকেই ছুড়ে মারছেন সাধারণ জনগণ। বিষয়টি চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে গেজেট প্রকাশ না করে ওই সমস্ত ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোটগ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি। সেইসাথে ওই অনিয়মের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ জানাচ্ছি।

Leave a comment