সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের আরো সচেতন হওয়া দরকার

শিক্ষককে মারপিট করা গুরুতর অপরাধ। সেই অপরাধের জন্য অবশ্য জুতোর মালা পরানোর এখতিয়ার কাউকে দেয়া হয়নি। আবার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য বিষয়টি একান্তই আমাদের, এটা পত্রিকায় প্রকাশ করার দরকার নেই বলাও কি এখতিয়ার বহির্ভূত নয়?

একটি অন্যায় আড়াল করতে গেলে অনেক অন্যায়ের আশ্রয় নিতে হয়। সমাজ সুন্দর করতে হলে কিছু আড়াল করে নয়, সমস্যা লুকোনোর বদলে সমস্যার কারণ শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়াই শ্রেয়। মাদরাসার একজন শিক্ষার্থী অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। সে জন্য প্রয়োজন মাদরাসার ছাড়পত্র। এ ছাড়পত্র পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে। ছাড়পত্র দিতে মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে দেখানোটা কি কাল বিলম্বের অজুহাত? তা না হলে ৭ম শ্রেণির ছাত্রের সাথে মাদরাসায় যাওয়া ইয়ারুল শিক্ষকের সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়ালো কেন? কেনই বা শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলো? অবশ্যই শিক্ষককে মারপিট করা অন্যায়। শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই বলে তাকে জুতোর মালা পরানোর সুযোগ দেশের প্রচলিত আইনে নেই। একজনকে সুধরে নেয়ার জন্য সালিসের নামে যদি অপদস্ত করা হয়, আর সে কারণে যদি তার জীবনটা স্বাভাবিক ছন্দ হারায়, তার দায় কে নেবে? ইয়ারুল ওই মাদরাসারই শিক্ষার্থী ছিলো। শিক্ষকরা কেমন শিক্ষা দিয়েছেন যে সেই ছাত্র এখন শিক্ষককেই ধরে মারছে। আবার শিক্ষকই বা কেমন, যে টিসি চাওয়ায় শিক্ষার্থীর সাথে বিরোধে জড়িয়েছেন? এসব প্রশ্নের জবাব জানা দরকার। আর তা জানতে না পারলে সমস্যা থেকেই যাবে। সমাজে এ ধরনের সমস্যা জিইয়ে রেখে আর যাই হোক, ভালো কিছু আশা করা যায় না।

অবশ্যই অপরাধ প্রবণতা রোধে শাস্তির বিধান করা হয়েছে। আবার অনেক সময় সামাজিক কিছু ভুল, অন্যায় সুধরে নেয়ার জন্য ক্ষমাও করা হয়। জুতোর মালা পরানো শাস্তি নয়, অপদস্ত। যা আইনে সমর্থন করে না, তা সমাজের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি করলে বিবেকবানদের মাথা নিচু হয়ে যায়।