দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনের পরদিন থেকেই নাটুদা ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নিখোঁজ

 

মিলছে না হদিস : এলাকায় নানা গুঞ্জন?

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরদিন থেকে নাটুদহ ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ইসমাইল হোসেন নিখোঁজ অবস্থায় রয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটিও ওই দিন থেকে বন্ধ রয়েছে এবং তাকে কোথাও খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো জিডি করা না হলেও তিনি ভয়ে আত্মগোপন করেছেন বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি গতকাল শুক্রবার জানাজানি হয়ে পড়লে এ নিয়ে শুরু হয়েছে এলাকায় নানা গুঞ্জন। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পাওয়া গেছে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।

জানা গেছে,  চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১৫ মার্চ। এ উপজেলায় মোট ৭৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে নতিপোতা ইউনিয়নের ২৬নং নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ইসমাইল হোসেন। তিনি ভোটগ্রহণের পরদিন থেকেই অনেকটা নিখোঁজ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে কোথাও খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি গতকাল শুক্রবার জানাজানি হলে তাকে তার বাড়িতেও পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে (০১৭১১-২১০০৭১) নম্বরে গতকাল বিকেল থেকে রাত ১০টা অবধি যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি সঠিকভাবে জানি না এবং তার পরিবারের কেউ আমাকে এ বিষয়ে জানায়নি। তবে শুনেছি তিনি ভয়ে আত্মগোপন করে আছেন। দামুড়হুদা আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল কামাল উদ্দিন বলেন, তিনি ভোটের পরদিন কলেজে এসেছিলেন এবং তিন দিনের ছুটি নিয়ে গেছেন। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বিষয়ে তিনি বলেন আমি শুনেছি তিনি ভয়ে আত্মগোপন করেছেন। কার ভয় এবং কিসের ভয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আমি সঠিক জানি না। তবে ভোটের দায়িত্ব পালনকে কেন্দ্র করেই তিনি আত্মগোপন করেছেন।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, বিষয়টি অবশ্যই উদ্বেগের তবে আমার জানা নেই এবং থানায় কেউ কোনো জিডিও করেনি। কী কারণে এবং কেন তিনি আত্মগোপন করেছেন তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও ভোটগ্রহণের দিন ভোট কেন্দ্রে কী কী ঘটেছিলো তা তিনি তার কাছের এক বন্ধুর কাছে ভোটের পরদিন আলাপ করেছেন বলে জানা গেছে।

জনৈক ওই ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভোটের দিন বেলা ১২টা থেকে ভোট গণনা পর্যন্ত তাকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিলো। এমনকি কন্ট্রোলরুমে যে রেজাল্টসিট জমা দেয়া হয়েছে সেটাও তার হাতের লেখা নয়। তাকে জোর করে স্বাক্ষর করে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে মানুষের মনে উকি দিচ্ছে নানা প্রশ্ন; কি এমন ঘটনা এবং কেনই বা তিনি আত্মগোপন করেছেন। এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন সেটাই দেখার অপেক্ষায় এলাকার সাধারণ জনগণ।

Leave a comment