সংসদে টিআইবির কঠোর সমালোচনা

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: সংসদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরের দিন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র কর্মকা- তদন্তের দাবি তুলেছেন সংসদ সদস্যরা। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থাটির তীব্র সমালোচনা করে এর অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। গতকাল বুধবার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলুল করিম সেলিম। পরে এ বিষয়ে আলোচনা করেন বিরোধীদলীয় হুইপ শওকত চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টি নেতা ও পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সংসদের বৈঠকের সভাপতি ডেপুটি স্পিকার এ সময় বলেন- টিআইবি সংসদ সম্পর্কে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা দুঃখজনক। পয়েন্ট অব অর্ডারে শেখ সেলিম বলেন, টিআইবি সংসদ নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। তারা আরেকটি নির্বাচনের কথা বলেছে কিসের জন্য। নির্বাচনে হেরে খালেদা জিয়া যে কথা বলছে টিআইবিও সেই একই কথা বলছে। টিআইবি হচ্ছে একটি এনজিও। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে তাদের কাজ। রাজনীতি নিয়ে কথা বলা তাদের কাজ নয়। একটি সার্বভৌম সংসদ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে তারা সীমা লঙ্ঘন করেছে। খালেদা জিয়া বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালে ৫ বছরে মাত্র ১০ দিন সংসদে এসেছিলেন। তাই যে বিরোধী দল সংসদে আসে না সেই বিরোধী দলের কি প্রয়োজন আছে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন আজকের বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ প্রায় প্রতিদিনই সংসদে আসছেন। কার জন্য আবার নির্বাচন দিতে হবে? রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলো। তাদের জন্য রাষ্ট্রের যে ক্ষতি হয়েছে তার বিচার করতে হবে। শেখ সেলিম বলেন, টিআইবি বাংলাদেশের সংসদ ও সংবিধান এবং রাজনীতি সম্পর্কে উপদেশ দেয়। তাদের উপদেশ দেয়ার কি অধিকার আছে? নির্বাচন হয়ে গেছে। বিএনপির জন্য আবার নির্বাচন চাইছে টিআইবি।

বিধানিকভাবে ৫ বছরের জন্য এ সরকার নির্বাচিত। পুরো মেয়াদেই থাকবে সরকার। কোন তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না, নাকে খত দিয়ে বিএনপিকে দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসতে হবে। তিনি টিআইবি’র বিরুদ্ধে রুলিং চান। টিআইবি’র টাকা জঙ্গি সন্ত্রাসীদের দেয়া কিনা, তাদের টাকা কোথা থেকে আসে তা এনজিও ব্যুরোকে তদন্ত করার এবং অর্থমন্ত্রীকেও এব্যাপারে প্রতিবেদন দেয়ার দাবি জানান। পরে বিরোধীদলীয় হুইপ শওকত চৌধুরী বলেন, টিআইবি যে বিরোধী দল দেখেছে তা হলো বেতন-ভাতা নিয়ে সংসদে না আসা ও সংসদে এলে অশ্লীল ভাষায় কথা বলা। আমরা সরকারের ভালো কাজকে সমর্থন দেবো এবং খারাপ কাজের গঠনমূলক সমালোচনা করবো সংসদে থেকেই।

জাতীয় পার্টি নেতা ও পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদও টিআইবি’র প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ সংস্থাটি দেশে সহিংসতা চায়। বিএনপি বিরোধীদলে থাকাকালে যখন মাত্র কয়েক দিন সংসদে ছিলো তখন তারা কোন বক্তব্য দেয়নি। আন্দোলনের নামে যখন মানুষ হত্যা করা হচ্ছিলো তখনও তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর এখন বিরোধী দল সংসদে আছে অথচ তারা বলছে কোনো বিরোধী দল নেই। বিরোধী দল সরকারেরই একটি অংশ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন কেবিনেটেও সরকারের বিরোধিতা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তো বলে দেননি যে, আমরা যে সিদ্ধান্ত নেবো তা চূড়ান্ত। এরপর তিনি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টিআইবি’র ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি অন্যান্য দেশে গঠনমূলক কাজ করছে। তবে আমাদের দেশে তাদের কাজ প্রশ্নবিদ্ধ।