গাংনীর চরগোয়ালগ্রামের অপহৃত মজনুকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার : নেপথ্যে প্রেম?

 

গাংনী প্রতিনিধি: অপহরণের ৮৪ দিন পর উদ্ধার মজনু মিয়া (৩০) নামের এক যুবকের সন্ধান পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে বামন্দী-ঝোড়াঘাট মাঠে বস্তাবন্দি অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে চরগোয়ালগ্রামের কুতুব আলীর ছেলে। প্রেম ঘটিত কারণে অপহরণ হয়েছিলো বলে পরিবারকে জানিয়েছেন মজনু।

বামন্দী পুলিশ ক্যাম্পসূত্রে জানা গেছে, সকালে ওই মাঠে বস্তাবন্দি অবস্থায় মজনুর সন্ধান পায় স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে বামন্দী পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে। এ সময় তার হাত-পা শিকল দিয়ে বাঁধা ছিলো। মজনু পুলিশকে জানিয়েছে গত ২৬ ডিসেম্বর বামন্দী বাজার থেকে তাকে ডেকে নিয়ে কৌশলে অপহরণ করে একটি অপহরক চক্র। তারপর থেকেই বস্তাবন্দি অবস্থায় হাত-পা মুখ বেঁধে বিভিন্ন স্থানে রাখে। শারীরিক নির্যাতন ও ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া না পেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ঠিকমত কথা বলতে পারছেন না।

এদিকে খবর পেয়ে মজুনর পরিবারের সদস্যরা বামন্দী পুলিশ ক্যাম্পে আসেন। বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই সামসুল আলম জানিয়েছেন, পিতা ও ভাইয়ের কাছে মজনুকে হস্তান্তর করা হয়েছে। অপহরণকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারে কাজ শুরু করেছে পুলিশ।

পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আরো জানা গেছে, গ্রামের এক মেয়ের সাথে তার প্রেমজ সম্পর্ক ছিলো। বছরখানেক আগে ওই মেয়ের বিয়ে হয় একই উপজেলার দেবীপুর গ্রামে। ওই মেয়ের স্বামী বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মজনুকে শায়েস্তা করতে উঠেপড়ে মজনুর পিছু নেয়। গতকাল মজনু পরিবারের লোকজনকে জানিয়েছেন, প্রেমিকার স্বামী তাকে বামন্দী বাজারে আসতে বলে। তার কথামতো এসে কৌশলে অপহরণের ফাঁদে পড়ে। অপহরণের সাথে আরো চারজন জড়িত রয়েছে। মজনু অপহরণের পর পরিবারের পক্ষ গাংনী থানায় একটি জিডি করা হয়। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মজনুর পরিবারের সদস্যরা।

অপহৃত মজনুর রহমানের পিতা কুতুব উদ্দিন শেখসহ পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, গত ২৬ ডিসেম্বর সকালে সে বাড়ি থেকে বামন্দী এসে অপহরকদের কবলে পড়ে। কয়েকদিন পর মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের সদস্যদের মোবাইলফোনে কিছু লাখ টাকা দাবি করে। তবে কোথায় কীভাবে টাকা পরিশোধ করতে হবে তা জানানো হয়নি। বিভিন্নভাবে পরিবারের লোকজন চাঁদাবাজদের সাথে যোগাযোগ করার পরও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। চাঁদাবাজরাও মাস খানেক আগ থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ায় এক প্রকার নিশ্চিত হয় যে মজনুকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে।