স্টাফ রিপোর্টার: মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের নিখোঁজ হওয়া বিমানটি বঙ্গোপসাগরের কোন পয়েন্টে এসেছিলো কি না তার কোনো সঠিক তথ্য বাংলাদেশের কোন রাডারে রেকর্ড করা নেই। সিভিল এ্যাভিয়েশন ও বিমানবাহিনীর কোনো রাডারেই তা ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এ দুটো সংস্থার উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্র গতকাল শনিবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কাজেই বঙ্গোপসাগরে চলমান অনুসন্ধান সবটাই অনুমাননির্ভর। নিখোঁজ বিমানটির ধ্বংসাবশেষ যদি এসে থাকে তাহলেই তা চিহ্নিত করা যাবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শনিবার সকালে নৌবাহিনীর দুটি মেরিনটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফট ও দুটি বড় আকারের যুদ্ধ জাহাজ (ফ্রিগেট) মোতায়েন করায় সম্ভাব্য পরিণতি কি হতে পারে এ নিয়ে দেখা দেয় নানা কৌতূহল। নৌবাহিনীর এ চেষ্টার সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে সিভিল এ্যাভিয়েশনের সদস্য এয়ার কমোডর শফিকুল আলম বলেন, যে কোনো দুর্ঘটনা বা নিখোঁজ রহস্য উদ্ঘাটনের ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করাটা অবশ্যই ইতিবাচক। সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে কোন প্রশ্ন বা সমালোচনার কোনো অবকাশ নেই। যদি কোনো কারণে নিখোঁজ বিমানটির ধ্বংসাবশেষও বঙ্গোপসাগরে এসে থাকে সেটা ধরা পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সে বাস্তবতা থেকেই এ নৌবাহিনীর এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয় ও দায়বদ্ধতার প্রতীক।
ঢাকার সিভিল এ্যাভিয়েশনের নিজস্ব রাডারে ওই রাতে বঙ্গোপসাগরে কোনো দেশী-বিদেশী কোনো বিমানই ধরা পড়েছিলো কি না জানতে চাইলে এয়ার কমোডর শফিকুল আলম বলেন, সিভিল এ্যাভিয়েশনের নিজস্ব রাডারে নিখোঁজ বিমানটির কোন ধরনের তথ্য ধারণ বা রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। কারণ কুয়ালালামপুর থেকে যে সময় বিমানটি টেক অব করে তার ১৯ মিনিট পর বাংলাদেশ স্থানীয় সময়ানুযায়ী অর্থাৎ ১১টার সময় সিভিল এ্যাভিয়েশনের নিজস্ব টাওয়ারে তা রেকর্ড করার কোন উপায় ছিলো না। সে সময় এ রাডারটি ছিলো বন্ধ। দীর্ঘদিনের পুরনো এ রাডারটি নানাবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে রাত ১১টার পর অফ করে রাখা হয়। আর উনিশ মিনিটের সময়সীমায় বিমানটি কুয়ালালামপুর থেকে বঙ্গোপসাগরের সীমায় আসার কোন কারণ নেই। কাজেই এ রাডারে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য ধারণ করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, সিভিল এ্যাভিয়েশনের রাডারের সক্ষমতা ১৮০ থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল। সে হিসেবেও বলা যায় বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী কিছু অংশ এর কাভারেজ পায়। কাজেই রাডার অন থাকলেও খুব একটা কিছু ধরা পড়ত না। বিমানবাহিনীর কোনো রাডারেও এ সংক্রান্ত তথ্য থাকলে তা শনিবার বঙ্গোপসাগরে অনুসন্ধান কাজ শুরুর আগে তা প্রকাশ করা হতো। তেমনটিও করা হয়নি বলে নৌবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে চলমান অনুসন্ধানের স্থায়িত্বকাল ও কার্যকারিতা সম্পর্কে এয়ার কমোডর শফিকুল আলম জানান, ম্যারিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট ও ফ্রিগেট দিয়ে অনুসন্ধান করার সময় পানির নিচে কোন ধরনের মেটালিক (ধাতববস্তু ) থেকে থাকলে সেটা সুনার সিস্টেমে চিহ্নিত করা যায়। ফ্রিগেট পানিতে চলা অবস্থায় আর এয়ারক্রাফট আকাশে একটি নির্দিষ্ট গতিসীমায় উড়ার মাধ্যমে এটা সম্পন্ন করে থাকে। এ পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় অনুসন্ধান কাজ সম্পন্ন করতে কয়েকদিন লাগতে পারে। প্রতিদিন কি গতিতে, সাগরের কতটুকু জায়গায় অনুসন্ধান করা হবে সেটার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।