চুয়াডাঙ্গা বোয়ালমারীতে দরিদ্র বিধবা মানসিক প্রতিবন্ধীর সন্তান হওয়ায় তোলপাড়

 

ভূমিষ্ঠ সন্তানের অভিযুক্ত পিতাকে বাচাতে প্রভাবশালীদের দৌড়ঝাপ

মোমিনপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের মোমিনপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের হতদরিদ্র এতিম বিধবা মানসিক প্রতিবন্ধী রোকেয়া খাতুন গতকাল শনিবার সকালে নিজ বাড়িতে সন্তান প্রসবের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। রোকেয়াকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে যে ব্যক্তি দেহভোগ করেছে অভিযুক্ত লম্পট সেই ব্যক্তির উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছে এলাকার সচেতনমহল। বাপ-মা মরা বিধবা অবৈধ সন্তান প্রসব করার পর বিনা চিকিৎসায় বিছানায় কাতরাচ্ছে। রোকেয়া শিশু বাচ্চার পিতার স্বীকৃতি দাবির বিষয়টি তেমন বুঝতে না পারলেও সে অভিযোগ করে জানিয়েছে এ সন্তানের পিতা মালেক। অভিযুক্ত মালেকের দাবি রোকেয়া আমার নাম জড়িয়ে মিথ্যা কথা বলছে। এলাকার সচেতনমহলের বক্তব্য গ্রামে এতো পুরুষ মানুষ থাকতে যখন মালেকের নাম বার বার সে বলছে তাহলে ঘটনার সাথে মালেক জড়িত। মালেকের নাম গতকাল সকালে রোকেয়া বলার পর থেকে প্রভাবশালীদের একটি গ্রুপ তাকে বাঁচাতে গোপনে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে।

সরেজমিনে জানা গেছে বোয়ালমারী গ্রামের স্কুলপাড়ার মৃত বিশারত আলীর বিধবা মেয়ে এক সন্তানের জননী রোকেয়া খাতুন ওরফে রোকে (৩৫) গতকাল শনিবার খুব সকালে ৬টার দিকে নিজ ঘরে সাভাবিকভাবে পুত্রসন্তান প্রসব করে। বিধবা রোকে স্বামী ছাড়া সন্তান প্রসবের খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশীসহ গ্রামের অনেক মানুষ তার বাড়িতে ছুটে আসে। গতকাল সকালে রোকেয়া খাতুন ওরফে রোকে গ্রামের অনেক মানুষের উপস্থিতে অভিযোগ করে মাথাভাঙ্গাকে জানায়, একই গ্রামের স্কুলপাড়ার মৃত আলেম মণ্ডলের ঘরজামাই দু সন্তানের জনক আব্দুল মালেক (৪০) দীর্ঘ দিন থেকে আমাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে দেহভোগ করে আসছিলো। অভিযোগকারী রোকে আরও জানায়, বাড়িতে শুধু আমি একা থাকার কারণে মালেক প্রায়ই রাতে আমার ঘরে আসতো। প্রতিবেশীরা জানায়, রোকে মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার স্বামী ৬ বছর আগে তালাক দিয়ে দেয়। একমাত্র মেয়ে প্রিয়াকে (৬) নিয়ে সে তার বাপের বাড়িতে বসবাস করে। বাপ-মা অনেক আগেই মারা গেছে। একমাত্র ভাই বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থাকার কারণে পৈত্রিক ভিটে বাড়িতে শুধু রোকে তার মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে। প্রতিদিন ভিক্ষা করে কোনো রকম তাদের খাবার জোটে। গ্রামের ইউনুছ মাস্টার বলেন, রোকের যে ব্যক্তি এ সর্বনাশ করেছে তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।

গতকাল সন্তান প্রসবের পর থেকে রোকে তার শিশুপুত্রকে নিয়ে বিনা চিকিৎসায় বিছানায় কাতরাচ্ছে। অপরদিকে অভিযুক্ত আব্দুল মালেক এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে নিজেকে নির্দোষ বললেও গ্রামবাসী তা মানতে নারাজ। এলাকাবাসী অসহায় রোকেয়ার সার্বিক সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন এনজিও সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।