চুয়াডাঙ্গার ৪টি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী নিয়ে কেন্দ্রীয় ফ্যাক্স : এম সানোয়ারও বললেন ফ্যাক্সপত্র ভুয়া

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার ৪টি উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির একক চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষিত ফ্যাক্সপত্র নিয়ে লিয়াকত আলী শাহর প্রশ্নের পর এবার প্রশ্ন তুলেছেন সানোয়ার হোসেন লাড্ডু। তিনি বলেছেন, ফ্যাক্সপত্রটি শুধু ভুয়াই নয়, ফোন নম্বরটি প্রমাণ করেছে, ওটা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে ছড়ানো হয়েছে। তিনিও দলীয় নেতা-কর্মী সমর্থকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অবশ্য যে প্রার্থীদের নাম ও ফ্যাক্সপত্রে রয়েছে তারা এবং তাদের লোকজন ওটাকে সঠিক বলেই দাবি করেছেন।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪টি উপজেলায় কেন্দ্র থেকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে বলে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একাংশের দফতর সম্পাদক আবু আলা সামসুজ্জামান স্বাক্ষরিত গতপরশু প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। পত্রিকা অফিসে প্রেরণের আগেই ফ্যাক্সে পাওয়া পত্র এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়ানো হয়। প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মমহাসচিব অ্যাড. রহুল কবির রিজভী আহম্মেদ স্বাক্ষরিত পত্রে চুয়াডাঙ্গার ৪টি উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী হলো- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. এমএম শাহজাহান মুকুল, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুর রহমান, আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল কাওনাইন টিলু, জীবননগর উপজেলয় চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইদুর রহমান ধন্দু। সকল ভেদাভেদ ভুলে এদেরকে নির্বাচিত করাও আহ্বান জানানো হয়। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পৌর বিএনপির সভাপতি মজিবুল হক মালিক মজু, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপি সভাপতি লিয়াকত আলী শাহ, আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপাতি শহিদুল কাওনাইন টিলুকে বিএনপি সমর্থিত এককদলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে জেলা বিএনপির একাংশ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বিএনপি একাংশের উপজেলা সভাপতি অ্যাড. শাহজাহান মুকুল, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একই অংশের সহসভাপতি ফজলুর রহমান, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচনে আলমডাঙ্গা বিএনপির একই অংশের সাধারণ সম্পাদক ভাংবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন লাড্ডুকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরই মাঝে কেন্দ্রীয় যুগ্মসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পত্র ফ্যাক্সযোগে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছায়। যে নম্বর থেকে ফ্যাক্স করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই জানা যায়, ওই নম্বরটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নয়। লিয়াকত আলী শাহ ওই ফ্যাক্সবার্তাকে ভেক বলে দাবি করেন। এর একদিন পর গতকাল একইপত্রকে ভূয়া এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন সানোয়ার হোসেন লাড্ডু। দুজন চুয়াডাঙ্গা বিএনপির দু পক্ষের নেতা। দু পক্ষই কেন্দ্রীয় ফ্যাক্সপত্রকে ভুয়া বলে দাবি তোলা এবং নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এ ধরনের পত্র দলীয় নেতাকর্মীদের শুধু বিভ্রান্তই করেনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে হাস্যরসেরও খোরাক হয়েছে।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি একাংশের দলীয় সমর্থিত এম সানোয়ার হোসেন গতকাল রাতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। তিনি উপজেলা বিএনপি একাংশের সাধারণ সম্পাদক। সাংবাদিক সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাক্স বার্তাটি বানোয়াট ও মিথ্যা। এমনকি ফ্যাক্সবার্তায় উল্লেখিত ফোন নম্বরটিও ভুয়া। দলীয় নেতা ও কর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ফ্যাক্সবার্তা প্রকাশের কারণে সম্মানহানি হয়েছে। এর বিরুদ্ধে মানহানি মামলাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি একাংশের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ মীর মহিউদ্দীন, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির একই অংশের সভাপতি আলহাজ মজিবর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আহমেদ প্রমুখ। তারা বলেছেন, আমরা ইজারার রাজনীতি করতে আসিনি। এ ধরনের বানোয়াট ও জাল ফ্যাক্স যারা এনে ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, লিয়াকত আলী শাহ জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু পক্ষের হলেও এম সানোয়ার হোসেন জেলা বিএনপির অপরাংশের সভাপতি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস পক্ষের।