হবু স্বামীর সাথে চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসা নিতে আসা যুবতী বিপাকে

 

কাজির নিকট বাগদানের আংটি বন্ধক রেখে বিয়ে

মারুফ হোসেন: হবু স্বামীর সাথে চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসা নিতে এসে জনরোষে পড়ে বিয়েতে বাধ্য হয়েছে কুষ্টিয়া পোড়াদহের যুবক-যুবতী। এঙ্গেজমেন্টের আংটি কাজির কাছে বন্ধক রেখে বিয়ে করে গতরাতে ট্রেনযোগে পোড়াদহের উদ্দেশে রওনা হয় নবদম্পতি।

কি এমন করেছিলো যে তাদেরকে বাগদানে দেয়া আঙটি কাজির কাছে বন্দক রেখে বিয়ে করতে হলো? হারাতে হলো তাদের মোবাইলফোন? এসব প্রশ্নের জবাব বেশ গোলমেলে। উৎসুকজনতা গতকাল বুধবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের মোহাম্মদী শপিং কম্প্লেক্স থেকে আটক করে পুলিশে দেয়। পুলিশ বিয়ে করার শর্তজুড়ে দিলে যুবক-যুবতী বড়বাজার বড় মসজিদের নিকটস্থ কাজি বাড়ি বিয়ে করে। বিয়ে করার টাকা কাছে না থাকায় যুবতী তার হাতে থাকা বাগদানের হাতের আংটি খুলে কাজির হাতে তুলে দিয়ে বলে, কাছে টাকা নেই। এই আংটিটা নিয়েই আমাদের বিয়ে পড়িয়ে আমাদের বাড়ি ফেরার সুযোগ করে দিন।

জানা গেছে, কুষ্টিয়া মিরপুরের পোড়াদহ রূপদহ চকপাড়ার আব্দুস সালাম বাচ্চুর ছেলে রাকিবুল ইসলাম সবুজ (২৬) ও কুষ্টিয়া জেলা সদরের বাগডাঙ্গার আনোয়ার বিশ্বাসের মেয়ে আইরিন খাতুন (১৯) একটি অটোযোগে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের একাডেমী মোড়ে আসেন। মোহাম্মদী শপিং কমপ্লেক্সের হোমিও চিকিৎসকের নিকট যান। ভিড় দেখে অপেক্ষা করতে থাকেন। দুজন খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে একে অপরের হাত ধরে। দৃশ্য দেখে কয়েকজনের সন্দেহ দানা বাধে। তাদের আহ্বানে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। যুবক-যুবতীকে আটক করে। পুলিশ খবর পেয়ে দুজনকে থানায় নেয়। এর মাঝে সবুজ ও আইরিনের কাছে থাকা মোবাইলফোন হাতিয়ে নেয়া হয়। অসৌজন্যমূলক আচরণও করা হয় তাদের সাথে। অভিযোগ, অসামাজিক কাজের উদ্দেশে বাড়ি ছেড়েছে। মোবাইলফোনে দুজনেরই অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে উভয়েরই অভিভাবকের তরফে জানানো হয়, এদের বিয়ের কথা চূড়ান্ত। ইতোমধ্যে বাগদানও হয়েছে।

তাহলে আটক করে পুলিশে কেন? পুলিশ বলেছে, উত্তেজিত জনতার মাঝ থেকে দুজনকে উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। পরে বিয়ের শর্তে দুজনকেই ছেড়ে দেয়া হয়। রাকিবুল ইসলাম সবুজ ও আইরিন জনতার প্রতি বিরূপ মন্তব্য করে বলেছে, আমাদের কোনো কথাই কেউ বিশ্বাস করেনি। বিয়ে করতে বাধ্য করা হলো। আমাদের কাছে টাকা না থাকার কারণে বাগদানের আংটি কাজিকে দিয়েই বিয়ে করে বাড়ি ফিরতে হলো। এ ঘৃণা মন থেকে মুছবো কীভাবে? যারা বিয়েতে বাধ্য করলো তারা আমাদের মোবাইলফোন দুটিও ফেরত দিলো না।