ফায়ার সাভির্সের গাড়ি সাইড দেয়া নিয়ে ঘটলো অনাকাঙ্খিত ঘটনা

 

তাছির আহমেদ: গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ডিজিটাল ঘড়ির সময় ছিলো সাড়ে ৪টা। সবাই হতবাক! কারণ চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সাভির্সের গাড়ি সাইড দেয়া নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সামনে ঘটে গেলো এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এক পর্যায়ে পৌরস্টাফদের তোপের মুখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে হলো ফায়ার সার্ভিস কর্মীর।

ঘটনা প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, হিজলগাড়ির বাণিজ্যিক খামারে আগুন লেগেছে, চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়ি বিকল লাইটসহ সাইরেন বাঁজিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদল দ্রুত গতিতে যাচ্ছে ওই আগুন নেভাতে। চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সামনে ঝিনাইদহ অভিমুখি একটি ট্রাকের কারণে (চট্রগাম-ড ৩৭৯৯) ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদল ক্ষিপ্ত হয়ে বাধাগ্রস্তকারী ট্রাকের চালক ও হেলপারকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। পিটুনির ঠেলায় ট্রাকের চালক ট্রাক ফেলে পালিয়ে গেলে এ সময় রাস্তায় লাগে জ্যাম। উৎসুক জনতার ভিড় আর রাস্তার জ্যাম কাটাতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চালক ওই ট্রাকটিকে রাস্তা থেকে পৌরসভার মধ্যে স্থানান্তর করেন। এ সময় পৌরসভার এক স্টাফ ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মীর উদ্দেশে বলেন, ‘ও ভাই আপনারা আগুন নেভাতে যাবেন না? পৌর স্টাফের এই কটাক্ষ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর গায়ে বেধে যায়। তাতে বেধে যায় এ দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা। এক পর্যায়ে পৌরস্টাফ একত্রিত হলে ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মীদল দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। তার অনেক আগেই স্থান ত্যাগ করেছে ফায়ার সার্ভিসের পানি বহনের গাড়িটি। এ সময় উৎসুক জনতার অনেকেই মন্তব্য করেন পাগলা গাড়ির একি পাগলামি।

ওই ট্রাকে উপস্থিত থাকা ট্রাক মালিকের মামাতো ভাই আবু সাইদ বলেন, ট্রাক চালাচ্ছিলেন মতিয়ার আর হেলপার করছিলেন মিরাজ। আমাদের বাড়ি মাগুরা জেলার শালিখা থানায়। আমরা ওখান থেকে বিচুলি লোড করে আনলোড করতে গিয়েছিলাম মেহেরপুর। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আপনারা সাইড দেন নাই কেন? এ প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, আমাদের গাড়ির সামনে ছিলো ছোট একটি মিনি ট্রাক। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির সাইরেন শব্দ প্রায় আধা কিলোমিটার দূর থেকে শোনা যায়, সাইড দেয়ার জন্য আপনারা আগে থেকে কেন প্রস্ততি নেন নেই, এ প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টাফ অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের মূলমন্ত্র গতিসেবা ত্যাগ। কোথাও আগুন লাগার ঘটনা শোনামাত্র সেখানে রওনার জন্য আমরা ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে প্রস্তুত গ্রহণ করি। এমনকি পোশাক পরতে পরতে গাড়িতে উঠি। মূল উদ্ধেশ্য ঘটনাস্থলে দ্রুত গতিতে পৌঁছে সার্বিক সেবা দান করতে হবে। আর আগুন লাগার ঘটনাস্থলে যদি কোনো জীবন আটকা পড়ে তাহলে আমাদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে ওই জীবনকে রক্ষা করতে হবে। আগুন নেভাতে দ্রুত গতিতে যাওয়ার পথিমধ্যে যদি কোনো ট্রাকের কারণে আপনাদের চলার গতি বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে ওই ট্রাক চালকের বিরুদ্ধে কি করণীয় আছে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই ট্রাকের বিরুদ্ধে অবশ্যই মামলা হবে কারণ রাস্তা ক্লিয়ারের জন্যই ফায়ার সার্ভিসের জোরালো সাইরেন বাজে। চুয়াডাঙ্গা পৌর সভার সামনের ঘটে যাওয়া ঘটনাকে তিনি অনাকাঙ্খিত ঘটনা বলে দাবি করেন তিনি।