১৫ উন্নয়ন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অসন্তোষ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি থেকে অর্থায়ন করা মোট ১৫ প্রকল্পের বিষয়ে এ নিয়ে সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে ৪টি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১০ ও ১১ মার্চ অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে দু দিনব্যাপি বৈঠকে বসছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্পের সার সংক্ষেপ তৈরি করে ইআরডিকে পাঠিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

এ বিষয়ে ইআরডির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এজন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, ইআরডি এবং বিশ্বব্যাংকের সাথে বসে এ সমাধানের পথ বের করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ, ক্রয় প্রক্রিয়ার জটিলতা এবং প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরিতে ত্রুটি রয়েছে জানিয়ে ইআরডি সূত্র জানায়, গতিহীন এসব প্রকল্পের অধিকাংশেরই মেয়াদ শেষ পর্যায়ে থাকলেও অর্থছাড় হয়েছে খুবই কম। ফলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

বিশ্বব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মেহরিন-ই মাহবুব বলেন, ১০-১১ তারিখের বৈঠকে ৪টি প্রকল্পের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে। দীর্ঘদিন পার হলেও এগুলোর বাস্তবায়ন এগোচ্ছে না। এছাড়া চলমান অন্যান্য গতিহীন প্রকল্পগুলোও নিয়েও আলোচনা হবে।
বিশ্বব্যাংকের হতাশা প্রকাশ করা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প। বিশ্বব্যাংকের ১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বৈদেশিক সাহায্যের এ প্রকল্পটি শুরু হয় ২০০৯ সালে। কিন্তু প্রায় চার বছর গেলেও অর্থছাড় হয়েছে একেবারেই কম। একই অবস্থা চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের। দু বছরে অর্থছাড় খুবই অল্প। এ প্রকল্পের এখনও প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমই শেষ হয়নি।

এছাড়া, ইমার্জেন্সি-২০০৭ সাইক্লোন সেন্টার পুনর্বাসন প্রকল্পে মনিটরিং জোরদার করতে বলা হয়েছে। প্রকল্প শুরুর পর চার বছর কেটে গেলেও প্রতিবন্ধী ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে নামমাত্র। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থার (বিআইডিএস) মহাপরিচালক কেএম মুজেরি বলেন, বাস্তবায়নের সক্ষমতা না থাকলেও বিভিন্ন কারণে মাত্রাতিরিক্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এজন্য কোনো বছরই এডিপি পুরোপুবি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। তবে বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সরকারকে আরও নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা ও অর্থছাড়ের বিষয়ে ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা দেশের উন্নয়নে এর বিকল্প নেই।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩০টি উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিশ্বব্যাংক ৫৮০ কোটি ডলার সহায়তা করেছে।