পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ত্রাস বোমা কাশেমের পতন : বন্দুক গুলি ও বোমা উদ্ধার

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার বোয়ালমারী কানাইবাবুর আমবাগানে চরমপন্থিদের গোপন বৈঠকে পুলিশের হানা

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে এলাকার বোমাবাজ বোমা কাশেমের পতন হয়েছে। পুলিশ বলেছে, গতপরশু মঙ্গলবার রাত সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার বোয়ালমারীর কানাইবাবুর আমবাগানের অদূরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় কাশেম ওরফে মেকুর কাশেম (৩৩)। সে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক কমান্ডার ছিলো।

পুলিশ বলেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের মৃত জুড়ন মণ্ডলের ছেলে কাশেমের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশে তৈরি বন্দুকসাদৃশ্য আগ্নেয়াস্ত্র, ৫ রাউন্ড বন্দুকের তাজা গুলি, ৪টি তাজা বোমাসহ বেশ কয়েকটি গুলির খোসা ও বোমার আলামত উদ্ধার করেছে।

ঘটনার পরপরই এএসপি (সার্কেল) কামরুজ্জামান, দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব, ওসি (তদন্ত) ফকির আজিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সকালেই লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয় এবং বেলা ১১টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠানো হয়। দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে থানা পুলিশ নিহতের লাশ তার বড় ভাই রবিউলের কাছে হস্তান্তর করে। বাদ আছর জানাজা শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সোয়া ৩টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার বোয়ালমারী কানাইবাবুর আমবাগানে ১০-১২ জন চরমপন্থি গোপন বৈঠক করছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি শক্তিশালী বোমা ছুঁড়ে মারে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। শুরু হয় উভয়ের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ। প্রায় আধঘণ্টাব্যাপি বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে অন্যান্য সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের মৃত জুড়ন মণ্ডলের ছেলে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক কমান্ডার আবুল কাশেম ওরফে বোমা কাশেম ওরফে মেকুর কাশেম নিহত হয়। নিহত বোমা কাশেম পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে উপজেলার বোয়ালমারীতে জোড়া খুন, আকবর অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ দামুড়হুদা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, বোমার স্প্রিন্টারে এএসআই নেওয়াজ মোর্শেদ ও কনস্টেবল খায়রুল ইসলাম গুরুতর আহত হন। তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বোমা বিস্ফোরণ ও পুলিশের কাজে বাঁধাদানসহ একটি হত্যামামলা দায়ের করেছেন।

নিহত বোমা কাশেমর পরিচয়: দামুড়হুদা উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামের মৃত জুড়ন মণ্ডলের ছেলে আবুল কাশেম দু ভাইয়ের মধ্যে ছোট। প্রায় ১৭/১৮ বছর আগে তার পিতা মারা যায়। সে গ্রামেরই সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর অভাবের কারণে আর স্কুলে যাওনা হয়নি। কৈশোর জীবন থেকেই সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে চারুলিয়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী জামুর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো বলে এলাকাবাসী জানায়। নিহত কাশেম ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। সে ৩ ছেলের জনক। স্ত্রী আঁখিতারা উপজেলার কুড়ুলগাছি গ্রামের আলিফ শেখের মেয়ে।