আমিই বিএনপির একক প্রার্থী : অপরাংশের ভিন্নমত
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লিয়াকত আলী শাহ নিজেকে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছেন। গতকাল বুধবার দুপুর আড়াইটায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদসম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। এ সময় জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে দামুড়হুদা বিএনপির একাংশের সভাপপতিসহ ৭ জন যুক্ত স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে লিয়াকত আলী শাহের বক্তব্যকে সত্যের অপলাপ বলে দাবি করা হয়েছে। বিএনপি দু পক্ষের দু প্রার্থীর পক্ষে পাল্টা অবস্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা নেমে এসেছে। সাধারণ সমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ। অথচ ভোটের আর মাত্র সপ্তাখানেক বাকি।
লিয়াকত আলী শাহ লিখিত বক্তব্যে দাবি করে বলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু তাকে দলীয় একক মনোনয়ন দেন। এদিকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস তার সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে ফজলুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে গত ২ মার্চ রোববার রাতে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস মোবাইলফোনে জানান তার সমর্থিত প্রার্থী ফজলুর রহমান শারীরিক অসুস্থ সে কারণে তুমি সন্ধ্যায় আমার বাসায় এসো ফজলুর রহমানের সাথে আলাপ-আলোচনা মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করে তোমাকে বিএনপির একক প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। আমি যেহেতু একজন প্রার্থী, তাই তার কথায় সরল বিশ্বাসে বিএনপির সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটানো এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে গত ৩ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় তার বাড়িতে (অহিদুলের) যায়। আলোচনার একপর্যায়ে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস উপস্থিত দু প্রার্থীসহ সকলকে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি সরল বিশ্বাসে স্বাক্ষর করি। তিনি উপস্থিত সকলের সামনে বলেন, ফজলুর রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থতার কারণে তিনি নির্বাচনের পথ থেকে সরে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। আমি ওই আশ্বাসে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রেখে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসসহ সকলকে দামুড়হুদয় নিয়ে আসি এবং চা-চক্রে মিলিত হই। সেখানে ঘটনাক্রমে আনন্দের বর্হিপ্রকাশ হিসেবে ছবি তোলা হয়। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় দৈনিকের মাধ্যমে জানতে পারি ফজলুর রহমানকে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস তার সমর্থিত একক প্রার্থী হিসেবে পুনরায় ঘোষণা দেন। যা আমার সাথে প্রতারণার সামিল বলে মনে করি। বিশেষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কথিত প্রার্থী ঘোষণাকে আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি একই সাথে আমি লিয়াকত আলী শাহ চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি সমর্থিত দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে একমাত্র বৈধ প্রার্থী। সুতরাং উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের উদ্দেশ্য প্রণোদিত ঘোষণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি। সেই সাথে আগামী ১৫ মার্চ অনুষ্ঠেয় দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে আমার ঘোড়া প্রতীকে ভোটযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সকলকেই আহ্বান জানাচ্ছি।
এদিকে দামুড়হুদা থানা বিএনপি একাংশের সভাপতি খাজা আবুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সহসভাপতি ইদ্রিস আলী, আব্দুর রব, সাংগঠনিক সম্পাদক আশারফুল হক, দর্শনা পৌর বিএনপির সভপাতি আব্দুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম খোকন যুক্ত স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, লিয়াকত আলী শাহ সত্যের অপলাপ শুরু করেছেন। ফজলুর রহমান আদৌ অসুস্থ নন। অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের নিকট লিয়াকত আলী শাহ স্বপ্রণোদিত হয়ে বসতে চান। সভায় উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষর করেন। অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে যার নাম ঘোষণা করবেন তাকেই তিনি মেনে নেবেন বলে জানান। পরবর্তীতে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস যখন ফজলুর রহমানের নাম পুনঃঘোষণা করেন, তখনই লিয়াকত আলী শাহ প্রকৃত সত্য আড়াল করে তিনি বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করে দলীয় নেতাকর্মীদের বিভ্রান্তিমূলক আচরণ করছেন। দলের ক্ষতি করছেন।