শিশু নির্যাতনকারী ডা. রত্না ও তার স্বামীকে পুলিশ স্কোয়াড দিয়ে নেয়া হয়েছে ঢাকায়

ঢাকার সিএমএম আদালতে আজ হাজির করা হবে দম্পতিকে

 

স্টাফ রিপোর্টার: গৃহপরিচারিকা শিশু আসমাউল হুসনাকে নির্যাতনকারী ডা. রত্না ও স্বামী প্রকৌশলী রেজাউলকে আদালতের নির্দেশে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। পুলিশ স্কোয়াড দিয়ে তাদেরকে গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে ঢাকায় নেয়া হয়। হাজারীবাগ থানায় দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলায় আজ তাদেরকে সিএমএম আদালতে হাজির করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা রেলপাড়ার প্রফেসর শমসের আলীর মেয়ে ডা. জান্নাতুল বাকী জান্নাত রত্না ঢাকার ধানমণ্ডিতে ভাড়ার বাসায় বসবাস করেন। বছরখানেক আগে তার শিশুসন্তানকে দেখভালের জন্য গৃহপরিচারিকা হিসেব চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির শ্রমিক শহিদুল ইসলামের মেয়ে আসমাউল হুসনাকে (৯) নিয়ে যান তিনি। শহিদুল ইসলামের বাড়ি জীবননগর উপজেলার সুবোলপুরে হলেও চুয়াডাঙ্গা রেলবাজার আরামপাড়ার ভাড়ার বাড়িতে বসবাস করেন। ঢাকায় নেয়ার কিছুদিনের মাথায় শিশু হুসনার ওপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। কারণে অকারণে ডা. রত্না তার ওপরে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করতেন। শরীরে ছ্যাঁকা দিতেন গরম খুন্তি বা চামচের। এরই মধ্যে প্রায় এক বছর কেটে যায়। কিন্তু মেয়ের সাথে কোনো রকম যোগাযোগ করতে পারেন না আসমাউল হুসনার পিতা-মাতা। এরই মধ্যে সে অসুস্থ হয়ে মানুষিক ভারসাম্য হারানোর উপক্রম হয়। এ পরিস্থিতিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে তাকে চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে তার পিতা-মাতার হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু মেয়ের চেহারা আর সারা শরীরজুড়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে হতবাক হয়ে যান হুসনার মা-বাবা।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত নির্যাতনকারী ডা. জান্নাতুল বাকী জান্নাত রত্না ও তার স্বামী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করেন নির্যাতিত শিশু হুসনার মা শিল্পী খাতুন। ওইদিনই সদর থানা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে পরদিন ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে।

পুলিশ জানায়, নির্যাতিত শিশু হুসনার মা শিল্পী খাতুনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৪ (২)/৩০ ধারায় দায়ের করা মামলাটি ১৩ ফেব্রুয়ারি ঘটনাস্থল রাজধানীর হাজারীবাগ থানা ডিএমপি পুলিশের কাছে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে ওই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয় দম্পতিকে।  মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মানি খন্দকার জানান, ঢাকার সিএমএম আদালত দম্পতিকে সেখানে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক আজ বুধবার তাদেরকে আদালতে হাজির করা হবে। সে কারণেই তাদেরকে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় নেয়া হয়েছে।