ফজলুর রহমানের প্রতি সমর্থন অটুট রেখেছেন অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস : লিয়াকত শাহ বললেন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ার‌ম্যান পদে জেলা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী লিয়াকত আলী শাহকে মেনে নেননি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। তিনি তার পূর্বের সমর্থিত প্রার্থী ফজলুর রহমানকেই দলীয় সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে পুনঃঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে লিয়াকত আলী শাহ পৃথক বিবৃতিতে অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে প্রতারণার আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ তুলে বলেছেন, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিএনপি বিরোধী চক্রান্তে মেতেছেন। ফলে বিএনপির সকল নেতাকর্মী সমর্থকদের সতর্ক থাকতে হবে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ১৫ মার্চ। প্রচার-প্রাচারণার আর মাত্র সপ্তাখানেক বাকি। আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদকে নিশ্চিত করেছে। জামায়াতেরও রয়েছে একক প্রার্থী। বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকায় দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। যতোটানা দ্বিধাবিভক্তও তার চেয়ে একাধিক প্রার্থী থাকার কারণে পরাজয় নিশ্চিত ভেবে ক্ষোভের আগুনে অনেকেই বিএনপি প্রার্থীদের উদ্দেশে কটুক্তিও করতে ছাড়ছেন না। এরই মাঝে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বিএনপির খণ্ডাংশের নেতাদের তাগিদেই জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক বিশেষ উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। জেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বৈঠকের আগেই মোজাম্মেল হকের বাসায় হাজির হয়ে মুরুব্বি মানি সভাপতি মানি না বলে মন্তব্যে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নস্যাৎ করে দেন। দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই এ অভিযোগ তুললেও দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতাদের মধ্যে প্রার্থী হওয়ার সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। রফিকুল হাসান তনু ব্যাপক আলোচনায় থেকেও তিনি মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। জেলা বিএনপির তরফে দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন। অপরদিকে জেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসও দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। তিনি দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক অপর চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের নাম ঘোষণা দেন। দুজনই বিএনপি প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণায়। এরই মাঝে গতপরশু দুজনকে নিয়ে বৈঠকে বসে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনায় বসেন অহিদুল ইসলাম। তিনি গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ফজলুর রহমানকে ঘোষণা করছি। কারণ গত ৩ মার্চ বৈঠকে প্রতিনিধিগণ সভাপতি হিসেবে আমাকে দায়িত্ব দেয়ায় আমি ফজলুর রহমানকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে তাকে নির্বাচিত করার লক্ষ্যে আহ্বান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে তিনি কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত বলেও দাবি করেছেন।

এদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি হাজি মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু যৌথ স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো দলীয় সমর্থিত প্রার্থী লিয়াকত আলী শাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত ৩ মার্চ অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের প্রার্থী ফজলুর রহমানের কিছু নেতাকর্মী আমার নিকট এসে বলেন, ফজলুর রহমান অসুস্থ। তাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। আপনি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের সাথে দেখা করুন। সরল মনে দেখা করি। বিএনপির বৃহত্তর স্বার্থে দেখা করতে গেলে নির্বাচনের বাস্তব অবস্থা দেখে তিনি ফজলুর রহমানকে বসিয়ে দেয়ার কথাও বলেন। পরে শুনি তিনি আমাকে নয়, তার সমর্থিত প্রার্থীকে নতুন করে সমর্থন দিয়েছেন। আমার আশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। যা প্রতারণার সামিল। অহিদুল ইসলামের বানোয়াট প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। বিভ্রান্তি দূর করতে লিয়াকত শাহ আজ সংবাদসম্মেলনেও করবেন বলে জানিয়েছেন।