নীতি-নৈতিকতার স্খলনে শ্রদ্ধায় টান পড়ে

 

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, তিনি তার নিজ গ্রামের এক জনপ্রতিনিধির স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছেন। এটা প্রধান শিক্ষকের দ্বিতীয় বিয়ে নয়, এর আগে বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন। এরকমই অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের মহাম্মদজমা গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে একই গ্রামের হোসেন আলী মেম্বার স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছেন। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর পরও তিনি চাকরিতে বহাল।

সমাজের সকলকে সমাজসমান দৃষ্টিতে দেখে না। শিক্ষকদের সমাজের মানুষ অনুকরণীয় আদর্শের দৃষ্টিতে দেখে আসছে বলেই তাদের সব কাজ মানায় না। অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে নতুন ঠিকানা গড়ে তোলা, নিজের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা একজন শিক্ষকের শুধু বেমানানই নয়, আইনের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধও বটে। বহু বিয়েকে সমাজ ভালো চোখে দেখে না। প্রথম স্ত্রী ঘরে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে অবশ্যই প্রথম স্ত্রীর লিখিত অনুমতি নিতে হবে। আলিয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কি তা নিয়েছেন? একের পর এক বিয়ে করা ব্যক্তিকে সমাজের মানুষ সুস্থ স্বাভাবিক হিসেবে যেহেতু দেখে না, সেহেতু তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি একেবারে অযৌক্তিক নয়। তারপর যদি হয় অন্যের স্ত্রীকে নিয়ে নতুন করে ঘর বাধার অভিযোগ, অন্যের স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগে মামলা রুজু হয় তাহলে বিভাগীয় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি বিধিভুক্ত বলেই প্রতীয়মান হয়। আর আইনের দৃষ্টিতে পুলিশ সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে এ ধরনের প্রবণতারোধে সহায়ক হবে।

একজনের স্ত্রী তার স্বামীর সংসার করবে কি করবে না, সে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তার রয়েছে। সংসার করতে না চাইলে স্বামীকে ত্যাগ করতেই পারেন, তারও বিধান বিদ্যমান। একজন পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইলে আইনে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপর অন্যের স্ত্রীকে ফুঁসলিয়ে বা কৌশলে অপহরণ করলে অবশ্যই দণ্ডনীয় অপরাধ। একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন শিক্ষক সমাজকেই খাটো করে। নীতি-নৈতিকতার স্খলনে শ্রদ্ধায় টান পড়ে।