মো. শাহাবুদ্দিন: চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলায় ব্যাপকহারে মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। ইতোমোধ্যে চাষিরা পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করা শুরু করেছে। আশানুরূপ দাম না পেয়ে চাষিরা হতাশা হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মরসুমে আবাদ হয়েছে। দামুড়হুদায় ২৫০ হে., চুয়াডাঙ্গা সদর ১০ হে., আলমডাঙ্গা ১০০ হে., জীবননগর উপজেলায় ৬০ হে. জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ১২/১৪ মে. টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বিশেষ করে দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় হুকো বোম্বায়, শুখসাগর জাতের পেঁয়াজ আবাদ করেছে যা বিঘা প্রতি ১০০/১৫০ মণ উৎপাদন হচ্ছে। এসব এলাকায় প্রতিদিন পেঁয়াজ ট্রাকযোগে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে। আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ২ মাস আগে পেঁয়াজের ভালো দাম থাকলেও এখন ২০০/২৫০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে যা উৎপাদন খরচ উঠছে না। ভারত থেকে ব্যাপকহারে পেঁয়াজ আমদানির ফলে দাম কমে গেছে বলে তারা জানিয়েছে।
মুন্সিপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি ইদ্রীস আলী জানান, তিনি এ বছর ১২ বিঘা জমিতে শুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ করেছে। তার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৩৫/৪০ হাজার টাকা। যে দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে লাভতো দূরের কথা লোকসান গুনতে হবে অনেক। হুদাপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলী জানান, ৬ বিঘা জমিতে হুকো বোম্বায় জাতের পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তা পেঁয়াজ বিক্রি করে উঠবে না। গত বছরও জেলার চাষিরা পেঁয়াজ আবাদ করে লাভের মুখ না দেখে লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে। এভাবে পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য না পেলে এ আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে চাষিরা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপিরচালক হরিবুলা সরকার মাথাভাঙ্গাকে জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার মাটি পেঁয়াজচাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ কারণে এবার পেঁয়াজের ভালো ফলন হয়েছে। পেঁয়াজ যাতে ভালো ফলন পায় তার জন্য কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হয়েছিলো। বাজারের মূল্য নিয়ন্ত্রণ না থাকায় চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি সঠিক সময়ে কৃষি অফিসের পরামর্শে পেঁয়াজচাষ করার আহ্বান জানান।