মাতবররা যখন বিচারক

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ছাগলে ক্ষেত খাওয়ার ঘটনায় সৃষ্ট গোলযোগের সালিস মীমাংসায় ক্ষেতমালিককেই ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলার ঘোলদাড়ি বাজারে অনুষ্ঠিত এ সালিস মীমাংসায় প্রথমে ক্ষেতমালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হলেও অনেকের অনুরোধে তা ১০ হাজার টাকায় পুননির্ধারণ করা হয়। জরিমানা কমিয়ে বিচারকরা বড় ধরনের মানবতা দেখানোর গর্ব করলেও দরিদ্র ক্ষেতমালিক ১০ হাজার টাকা দিতে অপারগ হয়ে তাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন।

এলাকাসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার চিলাভালকি গ্রামের মৃত কেতু মণ্ডলের ছেলে দরিদ্র কৃষক মিনাজ উদ্দীনের ক্ষেত খেয়েছে একই গ্রামের বিধবা ফুলজানের ছাগলে। এ সময় ছাগল ধরে মিনহাজ উদ্দীন বাড়িতে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে ছাগল ছেড়ে দেয়। পরে ছাগল মালিক ফুলজান মিনহাজের বাড়ি গিয়ে চড়াও হয়ে কেন তার ছাগলকে মারধর করে তা জানতে চায়। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিনহাজের স্ত্রীর সাথে বিধবা ফুলজানের মারামারির ঘটনা ঘটে। বাড়িতে ফিরে ফুলজান এ কথা তার ভাইদের জানালে তারা গিয়ে চড়াও হয় মিনাজের বাড়ি। এ সময় গ্রামের অনেকেই মধ্যস্থতা করে উভয়পক্ষকে শান্ত করে বাড়ি পাঠায়। বুধবারের এ ঘটনায় গতপরশু ফুলজান এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ করেন। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল ঘোলদাড়ি বাজারে এক সালিস বৈঠক বসে। সালিসে প্রথমে দরিদ্র ক্ষেতমালিক মিনাজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে অনেকের অনুরোধে তা কমিয়ে ১০ হাজার টাকায় পুনর্নির্ধারণ করা হয়। আনন্দ, আব্দুল কুদ্দুস, বাদল, শওকত আলী, শাহাজ উদ্দীন এ সালিস করেন বলে জানা গেছে। মানবিক দিক বিবেচনা করে জরিমানা নিতান্তই কম হয়েছে বলে সালিসকারীরা অনেকেই গর্ব করে বেড়ালেও দরিদ্র কৃষক মিনাজের পক্ষে এতো টাকা জরিমানা দেয়া মোটেও সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। এ জরিমানার টাকা পরিশোধ না করতে পেরে অপমানে হয়তো তাকে আত্মহত্যা করতে হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।