স্টাফ রিপোর্টার: আরও একটি ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের যুদ্ধক্ষেত্রে নামবে এশিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এ দল দুটি। ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি মানেই অন্য রকম উত্তেজনা। কোনো রেকর্ড টেকর্ডের ধার ধারে না তাদের লড়াই। আজ দল দুটি শুধু মর্যাদার লড়াইয়েই মাঠে নামবে না বরং টিকে থাকার লড়াইও তাদের। বাংলাদেশে অনুষ্ঠানরত এশিয়া কাপের ১২তম আসরে ইতিমধ্যে তারা দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। দু দলেরই অবস্থা একই- একটি হার ও একটি জয়। দু পরাশক্তিকেই হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে লঙ্কানদের কাছে পাকিস্তান হেরেছিলো ১২ রানে। আর শুক্রবার লঙ্কানদের কাছে কুমার সাঙ্গাকারার দারুণ নৈপুণ্যে ভারত হেরেছে ২ উইকেটে। অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশকে হারিয়েছে ৬ উইকেটে। আর পাকিস্তান ৭২ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তানকে। এ টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত ভারতের চেয়ে এখানেই এগিয়ে পাকিস্তান। আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে বোনাস পয়েন্ট অর্জন করেছে তারা। কিন্তু ভারত শুধুই পয়েন্ট পেয়েছে। এ দুই দলের একটি করে জয় থাকলেও পাকিস্তান বোনাস পয়েন্টসহ মোট পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। সবার ওপরে দু জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। আর পাকিস্তানের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট কম নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে ভারত। আজ তাই দু দলের জন্যই লড়াইটা টিকে থাকার। যারাই জিতবে তারাই ফাইনালের পথে অনেকখানি এগিয়ে যাবে। আর পরাজিত দল থাকবে বিদায়ের শঙ্কায়। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট যুদ্ধে কোনো পরিসংখ্যান মানে না। তবে এ পর্যন্ত দু দলের লড়াইয়ে জয়ের পাল্লা ভারি পাকিস্তনের দিকে। ১২৫ লড়াইয়ে পাকিস্তানের ৭৭ জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় ৫০ ম্যাচে। তবে রাজনৈতিক মতানৈক্যের কারণে গত তিন বছরে দু দেশের মধ্যে মাত্র ৫টি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ খেলাটি হয়েছিলো গত বছর চাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। ইংল্যান্ডের মাঠ বার্মিংহ্যামের ওই ম্যাচে পাকিস্তানকে ভারত হারিয়েছিলো ৮ উইকেটে। তবে এর আগে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ভারত সফর করে পাকিস্তান দল। ওই বছরের ডিসেম্বর ও পরের বছর জানুয়ারিতে মিলিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ সফরকারীরা জিতে নেয় ২-১ ব্যবধানে। তবে এর আগে তাদের সর্বশেষ লড়াইটি ছিলো গত এশিয়া কাপে। ২০১২ সালের ১৮ মার্চের ওই ম্যাচে বিরাট কোহলির ক্যারিয়ার সেরা ১৮৩ রানের ইনিংসে ভারত জিতেছিলো ৬ উইকেটে। পাকিস্তান প্রথমে ৩২৯ রান করেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি সেবার। ভারত-পাকিস্তান এ পর্যন্ত এশিয়া কাপে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছে। এ টুর্নামেন্টে ভারত এগিয়ে আছে ৫-৪ জয় নিয়ে। ১৯৯৭ সালের এশিয়া কাপের অপর ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছিলো।
আজকের ম্যাচের আগে দুই দলের আলোচিত চরিত্র ভারতের ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও পাকিস্তানের স্পিনার সাঈদ আজমল। বিরাট কোহলি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গত এশিয়া কাপে খেলেছিলেন ১৮৩ রানের ইনিংস। এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলেছেন দুর্দান্ত ১৩৬ রানের ইনিংস। আর বিপরীতে পাকিস্তানের স্পিনার সাঈদ আজমল এখনও জ্বলে উঠতে পারেননি। তবে ভারতকে সামনে পেলে তিনি সবসময়ই জ্বলে ওঠেন। পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান উমর আকমলও ভারত দলপতি কোহলিকে ভাবিয়ে তুলেছেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে এই তরুণ ব্যাটসম্যান আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেছেন ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস।
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা/চেতেশ্বর পুজারা, আজিঙ্কা রাহানে, আম্বাতি রাইডু, দীনেশ কার্তিক, রবীন্দ্র জাদেজা, স্টুয়ার্ট বিনি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভুবনেশ্বর কুমার ও মোহাম্মদ শামি।
পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: মিসবাহ-উল-হক (অধিনায়ক), শারজিল খান, আহমেদ শেহজাদ, মোহাম্মদ হাফিজ, শোহাইব মাকসুদ, উমর আকমল, শহীদ আফ্রিদি, আনোয়ার আলী, উমর গুল, সাঈদ আজমল ও জুনায়েদ খান।