চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলার আমবাগানে মুকুল আসা শুরু করেছে

মুকুল ধরে রাখতে পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগানব্যবসায়ীরা

মো. শাহাবুদ্দিন/শরিফ রতন: চুয়াডাঙ্গার চার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আমগাছের মুকুল আসা শুরু করেছে। চারিদিকে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে মাঠ। চাষিরা মুকুল ধরে রাখতে আগে থেকে পরিচর্যা শুরু করেছেন। গত বছর হপার পোকার আক্রমণে মুকুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছিলেন। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আমবাগান রয়েছে।  এ বছর ১৬ হাজার ৪৯৯ মে. টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সদর উপজেলায় ৩৫২ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২১০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ২৮০ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। প্রতিবছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রচুর পরিমাণে উন্নত জাতের আম উৎপাদন হয়ে থাকে। এসব আম ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত বছর মুকুল আসার পর হঠাত করে হপার পোকার আক্রমণ শুরু হয়। এরই কারণে আমের মুকুল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এতে বাগানব্যবসায়ী ও আমচাষিদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর হপার পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে আগেভাগেই বাগানব্যবসায়ীরা আমগাছের পরিচর্যা শুরু করেন। ইতোমধ্যে গাছের ডালেডালে মুকুলে ভরে গেছে। যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তা ধরে রাখতে ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করছেন তারা। কিছুদিন পর গুঁটি ধরা শুরু করবে। আমব্যবসায়ী প্রতি বছর ১০ থেকে ১৫ হাজার পরিবার আম ভাঙা পর্যন্ত কাজে নিয়োজিত থাকে। ৩/৪ মাস বাগানব্যবসায়ীরা যেমন লাভ করে তেমনি এসব পরিবার ভালো আয় করে।

শিবনগর গ্রামের আমবাগান ব্যবসায়ী আসলাম জানান, গত বছর তার বাগানে মুকুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ৬ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর লোকসান পুষিয়ে নিতে গাছের পরিচর্যা শুরু করেছেন তিনি। যে পরিমাণ মুকুল এসেছে তা ধরে রাখতে পারলে ভালো লাভবান হওয়া যাবে। দামুড়হুদা সদরের প্রবীণ আমবাগান ব্যবসায়ী আব্দুল গনি জানান, গত বছর বাগান থেকে হপার পোকার আক্রমণে ও কুয়াশার কারণে অনেক বাগানের মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। লোকসান না হলেও ভালো লাভের মুখ দেখতে পাননি তিনি। এ বছর ৮টি বাগান কিনেছেন। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রচুর পরিমাণে আম বাগান রয়েছে। এখনকার আম খুব সুস্বাদু। আমের মুকুল ধরে রাখতে ও বাজারজাত করতে বাগানব্যবসায়ী ও বাগানমালিকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের ভালো ফলন হবে।