ডানে বামে, সামনে পিছে বোমা। মাটির নিচেও। এসব রাখছে কারা? অপরাধীরা। শিশু-কিশোরেরা সবসময়ই কৌতূহলী। অজানাকে জানার আগ্রহ এদের সহজাত। কুড়িয়ে পাওয়া জর্দ্দার কৌটা, রশি দিয়ে জড়ানো বস্তু কৌতূহলবশে নেড়ে-চেড়ে দেখতে গিয়ে ভয়াবহ পরিণতির শিকার হচ্ছে এরা। ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে। কারো প্রাণ ঝরছে, কেউ কেউ হারাচ্ছে অঙ্গ। মাঝে মাঝেই সংবাদপত্রের পাতায় উঠে আসছে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদ।
নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, বোমাবাজ চক্রের অপতৎপরতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বোমার বারুদ পড়শি দেশ থেকে চোরাইপথে আমদানি করা হয়। অপরাধীদের মধ্যেই রয়েছে বোমা তৈরির কারিগর। বোমা এমন এক মারণাস্ত্র, যা অপরাধীদের জন্য বহন সহজ। বোমা নিক্ষেপ করে সহজেই সাধারণ মানুষের মাঝে হারিয়ে গ্রেফতার এড়িয়ে আত্মগোপন করতে পারে তারা। দিন দিন যেভাবে বোমা নামক মারণাস্ত্রের অপব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে তা রোধে নানামুখি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যতো বিলম্ব হবে, ততোই ঝুঁকির মধ্যে পড়বে সমাজ। অপরাধীচক্রের বাড়-বাড়ন্ত রোধে তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের লাগাতার অভিযানের পাশাপাশি মাদক উচ্ছেদে আন্তরিকতা হতে হবে। সরকারের অবহেলিত জনপদে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান গড়ে তোলার দিকে আন্তরিক হওয়া জরুরি। কেননা বেকারত্ব ও মাদকের সহজলভ্যতা অপরাধপ্রবণতাকে উসকে দেয়, দিচ্ছে।
বোমা তৈরির মূল বারুদ আমাদের দেশে অতোটা সহজলভ্য নয়, যতোটা সহজলভ্য প্রতিবেশী দেশে। চোরাচালানিদের মাধ্যমেই বোমার বারুদ দেশে পাচার হয়ে আসে। চোরাচালানরোধে সীমান্তরক্ষীদের আরও দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে অপরাধীচক্রের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের জোরালো অভিযান প্রয়োজন। ব্যর্থতায় বাড়াচ্ছে দীর্ঘশ্বাস। ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে সমাজ।