প্রেমিক বাবুসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে খুলনায় মামলা
আলম আশরাফ: মোবাইলফোনে প্রেম। টানা ৪ বছরের প্রেমের অবসান ঘটলো তিনদিনের নাটকীয় ঘটনার। অবশেষে প্রেমিকপক্ষের লোকজনের কাছে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে প্রেমিকা ও তার পরিবারের সদস্যদের। বাড়ি ফিরে প্রেমিক বাবুসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুলনার ফুলতলার দাউকুনার মজিবর রহমান সরদারের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে পলি খাতুনের অভিযোগে জানা গেছে, বছর চারেক আগে মোবাইলফোনে প্রেমসম্পর্ক গড়ে ওঠে দর্শনা পৌর এলাকার আজমপুরের মোশাররফ হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম ওরফে বাবুর। সম্পর্কে টানে বাবু কয়েকবার ফুলতলাসহ বিভিন্ন স্থানে পলির সাথে দেখা করেছে। এমনকি পলি গত কয়েকমাস আগে বাবুর বাড়িতে এসে রাতযাপন করেছে।
পলি অভিযোগে আরো বলেছে, মাস ছয়েক আগে বাবু তাকে নিয়ে জীবননগরের একটি বাড়িতে গিয়ে ওঠে। সেখানে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়। পলিকে বিয়ের মিথ্য প্রলোভন দেখিয়ে বাবু রাতভর দেহভোগ করেছে। মাস তিনেকের মাথায় পলি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সে বুঝতে পারে। বাবুকে অন্তঃসত্ত্বার কথা জানাতেই বাবু কৌশল অবলম্বন করে। গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ফুঁসলাতে থাকে পলিকে। এক পর্যায়ে পলি ৩ মাসের অনাগত সন্তান গর্ভপাত ঘটায় ফুলতলার একটি ক্লিনিকে। সম্প্রতি পলিকে বিয়ে দেয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হলে পলি বাবুকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। পলিকে বাড়ি ছেড়ে দর্শনায় আসতে বলার কারণেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে পলি প্রেমিকের আহ্বানে দর্শনায় আসে। আজমপুরের একটি বাড়িতে ঠাঁই নেয় পলি। সেখান থেকেই শুরু হয় নাটকীয় ঘটনার। পলির অবস্থান জেনে সটকে পড়ে বাবু। বাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের সময় ঘুরাতে থাকে। সকাল না বিকেল, বিকেল না রাত করে কাটিয়ে দেয়া হয় টানা দু দিন। পরপর দুবার ভেস্তে যায় বিয়ে। এক পর্যায়ে ২২ ফেব্রুয়ারি পলি দর্শনা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে বাবুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতেই বাবুকে রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বাবুকে পুলিশের হেফাজত থেকে মুক্ত করা হলেও অবশেষে তা হয়নি। এদিকে ২২ ফেব্রুয়ারি পলির বড় বোন পপি ও তার প্রতিবেশী চাচা শহিদুল ইসলাম জন্ম নিবন্ধন সদনসহ বিয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে দর্শনায় পৌছান। পরদিন দর্শনায় আসেন পলির বাবা মজিবর রহমান সরদার। তিন দিনের মাথায় বাবু ও পলির বিয়ে হয়নি। বরং পলিকে নির্যাতন শেষে দর্শনা থেকে তাড়ানো হয়েছে বলেও করা হয়েছে অভিযোগ। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার পলি বাদী হয়ে খুলনা আদালতে অভিযুক্ত প্রেমিক বাবু, বাবুর চাচা শহিদুল, ভাই সোহেল ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।