স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রফিক ও সালাম জীবন দিয়ে ভাষার অধিকার দিয়েছিলেন। আর রফিক এবং সালামই উদ্যোগ নিয়ে ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন। তিনি গতকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৪ উদযাপন উপলক্ষে চার দিনব্যাপি সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এ সেমিনারের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আর কখনোই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মানি লন্ডারিঙের রাষ্ট্রে পরিণত হবে না। আমরা ক্ষমতায় এসে আমাদের সুদীর্ঘ ইতিহাস সমৃদ্ধ করি এবং যেকোনো মূল্যে আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখবো।
শহীদ দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা শ্রীমন্ত টাউন হলে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদউজ্জামান লিটু। বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আজিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিক সাঈদ মাহবুব ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার নূরুল ইসলাম মালিক। এছাড়া বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান।
প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন তার বক্তৃতায় বলেন, একুশের আত্মত্যাগের মধ্যদিয়ে এদেশের মানুষের মনে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম বীজ বপন হয়েছিলো। একুশের অনন্য সাহসই প্রতিটি আন্দোলনে বাঙালিকে দুর্জয় শক্তি জুগিয়েছিলো। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার সংগ্রামে বায়ান্নর রক্তঝরা এ দিনটি মূলত বাঙালির স্বাধিকারের চেতনায় জেগে ওঠার দিন। এদিনে দেশের মানুষ একটি দন্ডে একাত্ম হয়েছিলো। বাঙালি জাতি সত্ত্বা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিলো, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্যদিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছিলো। পৃথিবীর ইতিহাসে এদিন স্মরণীয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুন্সি আবু সাইফ। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) আনজুমান আরা, সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল আমিন, সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হোসেন উজ্জ্বল, ভি.জে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীফ হোসেন, এনডিসি মোখলেছুর রহমান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আরেফিন আলম রনজু, যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান কবির, আব্দুল কাদের, জামান ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কোহিনুর বেগমসহ বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গার দৌলতদিয়াড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বাঁশ ও কাগজ দিয়ে তৈরি করে অস্থায়ী শহীদ মিনার। পরে সেখানে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সকল ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ। সকাল ৯টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এসএমসির সভাপতি হাবলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন প্রধান শিক্ষক রেজাউল কবীর। সভা শেষে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা রেলবাজার ফাজিল মাদরাসায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি হুমায়ুন কবীর মালিক, প্রভাষক রুহুল আমিন ও ক্রীড়া শিক্ষক রকিবুল ইসলাম। দোয়া অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মাও. আশরাফুল হক।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস পালন করা হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল ৭টায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিসেস মাহজেবীনের নেতৃত্বে সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে শহীদ দিবসের ৱ্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ের নতুন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে বিদ্যালয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে সীমান্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে এ দিবস পালন করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা শহীদ দিবসের ৱ্যালি শেষে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজেস্থ চুয়াডাঙ্গা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করে চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমীর পরিচালক ইসলাম রকিব, ব্যাটিং কোচ সাইফ রাসেল, ফিল্ডিং কোচ রাজু আহম্মেদ ও বোলিং কোচ ইমরান হোসেন।
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখা গভীর ভাবগম্ভীর্য পরিবেশে প্রভাত ফেরিতে অংশগ্রহণ করে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনে শহীদ স্মৃতি সৌধের বেদীতে ফলের তোড়া প্রদান করেন। প্রভাত ফেরিতে নেতৃত্বে দেন আইডিইব চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি রেজা হোসেন জোয়ার্দ্দার বাবু ভাই।
ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সকাল ৯টায় ডিঙ্গেদহ সোহরাওয়ার্দ্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠে ডিসোর আয়োজনে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন শঙ্করচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. রহমান। ক্যাম্পের সহযোগিতা করেন ডিঙ্গেদহ বাজার কমিটি, উদীচী ডিঙ্গেদহ শাখা, নাভানা, অ্যাপেক্স, অরিয়ন, একমি, ইনসেফটা, বায়ু ফার্মা, রেনেটা, এসকেএফ, স্কয়ার, বেক্সিমকো, অফসোনিন ও সিল্ক ফার্মা। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডিসোর সভাপতি ইব্রাহিম কুদ্দুস, সদস্য মোক্তার হোসেন, বাবু, বাজার কমিটির সম্পাদক বশির আলী, উদীচীর গোলাম মোস্তফা নান্না প্রমুখ। চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন- চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট পেইন (মেডিসিন) ডা. গোলাম মুরশিদ ডালিম, মেডিকেল অফিসার ফারহানা ওয়াহিদ তানি, কনসালটেন্ট সার্জারি ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন, পিজি হাসপাতালের কনসালটেন্ট (চক্ষু) ডা. শফিউজ্জামান সুমন।
এছাড়াও সকাল ৮টায় সোহরাওয়ার্দ্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠ, ডিঙ্গেদহ বালিকা বিদ্যালয়, ডিঙ্গেদহ কিন্ডারগার্টেন, আওয়ামী লীগ ডিঙ্গেদহ অঞ্চল, ডিঙ্গেদহ দাখিল মাদরাসা, সম্মিলিত আন্ততর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন পরিষদ এর ৱ্যালি ডিঙ্গেদহ বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
অপর দিকে সকাল ৭টায় সিডিএফ, গভার্নেন্স কোয়ালিশন, এডাব, জেলা লোকমোর্চা, জিসিএ, পাস, ওয়েভ, প্রত্যাশা, রিসো, আত্মবিশ্বাস, উদীচীর বর্ণাঢ্য ৱ্যালি চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
বদরগঞ্জ ব্যুরো জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ মর্যাদার সাথে দিবসটি পালন করেছে। সকাল ৮টায় সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বদরগঞ্জ আলিয়ারপুর আজিজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মোতালেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- কুতুবপুর ইউপি মেম্বার মোমিনুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের সদস্য মো. শাখাওয়াত হোসেন টাইগার, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন আহমেদ, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, বিদ্যালয় পরিচালনা সদস্য আশিফ রহমান, আজাদ ফেরদৌস পানজু, রমজান আলী, কাজী তারিকুজ্জামান লাল্টু, শিক্ষক সাইফুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ। বদরগঞ্জ বাকি বিল্লাহ কামিল মাদরাসায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সকাল ৯টায় দোয়া ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। মাদরাসা অধ্যক্ষ মো. আব্দুল জলিল হাওলাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- সহকারী মুহাদ্দিস ড. মাও. রুহুল আমীন, হযরত মাও. নুরুল আলম সিদ্দিকী, সহকারী অধ্যাপক মো. মাহাবুর রহমান ও আব্দুল জব্বার প্রমুখ। এছাড়া আলিয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সভাপতি মারুফ আহমেদ, শিক্ষক মানোয়ার হোসেন ও সাগর আহমেদ। ভুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমেদ আলী, পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহাসিন আলী, সদস্য আ.মজিদ মালিতা, লালচাঁদ, হাতেম ও রবিউল হক।
অপরদিকে সকাল সাড়ে ৯টায় বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ আয়োজিত শহীদ দিবস পালন উপলক্ষে ৱ্যালি বের করে। এ সময় সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জুতো-স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে শহীদ মিনারে ওঠেন। কলেজ অধ্যক্ষের সহযোগিতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জুতো-স্যান্ডেল পায়ে আলিয়ারপুর আজিজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে উঠে শহীদ স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করতে গেলে সকল শ্রেণির মানুষ বদরগঞ্জ কলেজ কর্তপক্ষকে ধিক্কার জানায়। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানিয়েছে কলেজ সভাপতি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আজিজুল রহমানের কাছে।
বেগমপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গার হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদার মধ্যদিয়ে মহান শহীদ দিবস পালন করা হয়। হিজলগাড়ির অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আশরাফুল হক মাসুম ও প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন স্বপন। দোস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বেগমপুর ইউনিয়ন আ.লীগের সহসভাপতি আব্দুল বারী বিশ্বাস, প্রধান শিক্ষক পলাশ, যুলীগ নেতা এনামুল হক প্রমুখ। কোটালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হোসেনের নেতৃত্বে দিবসটি যথাযথভাবে পালন করা হয়।
মোমিনপুর প্রতিনিধি জানিয়েছে, মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের আয়োজনে গতকাল সকালে নীলমণিগঞ্জ ফুটবল মাঠ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইউনিয়নের নীলমণিগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নীলমণিগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বোয়ালমারী, চাঁদপুর, কাথুলী, সরিষাডাঙ্গা, নীলমণিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সানসাইন কিন্ডারগার্টেন, দীপশিখা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা শহীদ মিনারে জমায়েত হন। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান নান্নু। বিশেষ অতিথি ছিলেন মোমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মোস্তাফিজুর রহমান নিপুল মেম্বার।
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেহালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন দিবসটি যথাযথ মযার্দায় দিবসটি পালন করে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন, আব্দুর হান্নান মাস্টার, সালাউদ্দিন, যুবলীগ নেতা মঈন, রইদুল, হিরালাল, মস্তফা প্রমুখ। এছাড়া মুন্সিগঞ্জ একাডেমী, মুন্সিগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, সৃজনী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের উদ্যোগে সকালে প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এছাড়া জেহালা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট, ডা. মরহুম মকছুদ আলী মুন্সিগঞ্জ পশুহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিক কিন্টারগার্টেন স্কুল, ড্যাফোডিল কিন্টারগার্টেন অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুল শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় এ দিবস নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান দিনটি পালন করে। সকাল ৭টায় আলমডাঙ্গা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এ সময় আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এরশাদপুর একাডেমী, আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, এম সবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলমডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলমডাঙ্গার ব্রাইট মডেল স্কুল, আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, প্রাইম পলিটেকনিকের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অপরদিকে, আলমডাঙ্গা পাবলিক লাইব্রেরিতে সকাল সাড়ে ৮টায় আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মজিবর রহমান। বক্তব্য রাখেন আলমডাঙ্গা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শহিদ আজহার। বিশেষ অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজসেবক সাবেক মৎস্য কর্মকর্তা মীর আব্দুল হামিদ চৌধুরী, পাবলিক লাইব্রেরির কোষাধ্যক্ষ ব্যাংক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দীনেশ চন্দ্র পাল। আলমডাঙ্গা কলেজিয়েট স্কুলের উপাধ্যক্ষ শামীম রেজার উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন- প্রাইম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রীস খান, ব্রাইট মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোলাম জাকারিয়া হিরক,
একই অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ক, খ, গ- ৩টি পৃথক গ্রুপে এ দুটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কবিতা আবৃতিতে ক গ্রুপে ১ম হয়েছে আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী জুঁই, খ গ্রুপে ১ম হয়েছে এরশাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শাওন ইসলাম, গ গ্রুপে ১ম হয়েছে আলমডাঙ্গা পাইলট হাইস্কুলের ছাত্র আল আরাফাত। চিত্রাংঙ্কন প্রতিযোগিতায় ক গ্রুপে ১ম হয়েছে কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার রহমান। খ গ্রুপে ১ম হয়েছে আলমডাঙ্গা মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া ইয়াসমিন শশী সে সম্প্রতি খুলনা অনুষ্ঠিত বিভাগীয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করে। গ গ্রুপে ১ম হয়েছে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া নওরীন। শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনায় নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। ভোরে দর্শনা পৌর আ.লীগের কার্যলয়ে দলীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয়, দলীয় ও শোক পতাকা উত্তোলন করেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। পরে কেরুজ বাজার মাঠ থেকে প্রভাতফেরি বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দর্শনা কলেজ মাঠের শহীদ বেদীতে পুস্পমাল্য অপর্ণ করা হয়। প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহণ ও শহীদবেদীতে পুস্পমাল্য অর্পণ যে সকল প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে- দর্শনা পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দর্শনা পৌর আ.লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, দর্শনা পৌর বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন, সমাতান্ত্রিক দল জাসদ, দর্শনা সরকারি কলেজ, দর্শনা ডিএস ফাজিল মাদরাসা, দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, দক্ষিণচাদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, অংকুর আদর্শ বিদ্যালয়, লিটিল এনজেলস কিন্ডারগার্টেন, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, রামনগর মাথাভাঙ্গা যুবসংঘ, দর্শনা প্রেসক্লাব, শ্যামপুর, পূর্বরামনগর, পরাণপুর, দক্ষিণচাদপুর, কাস্টমস, পশ্চিমরামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়নগর, শান্তিনগর, আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুক্তি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গণউন্নয়ন গ্রন্থাগার, মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন, রিকশা ও ভ্যানশ্রমিক ইউনিয়ন, নির্মাণশ্রমিক ইউনিয়ন, বন্ধন, দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষক সমিতি, দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতি, চিরন্তর, স্বপ্নতরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন। পরে শপথবাক্য পাঠ করান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অ্যাড শহিদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- এমপি আলী আজগার টগর, কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল কাইয়ুম, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, পৌর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম, দর্শনা জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান, আ.লীগ নেতা গোলাম ফারুক আরিফ। এছাড়া কেরুজ চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্সের নেতৃত্বে প্রভাতফেরিতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এদিকে দামুড়হুদা পারকৃষ্ণপুর-মদনা, কুড়ুলগাছি, কার্পাসডাঙ্গা ও হাউলী ইউনয়িনের বিভিন্ন স্থানে মহান একুশে পালন করা হয়েছে। কুড়ুলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুড়ুলগাছি দাখিল মাদরাসা, ধান্যঘরা, কুড়ুলগাছি পশ্চিম পাড়া, আনন্দবাজার , চণ্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ দিবসটি পালন করে। এছাড়াও ঠাকুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপি পালন করে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার প্রভাতে জীবননগরে প্রভাতফেরি ও শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজেদুর রহমানের নেতৃত্বে প্রভাতফেরি বের হয়। উপজেলা প্রশাসনের প্রভাতফেরিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, সুধী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও গতকাল প্রভাতে জীবননগর ডিগ্রি কলেজ, জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, দৌলৎগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশরাফুল মডেল একাডেমী, আকলিমা প্রি-ক্যাডট স্কুল, পৌর কিন্ডারগার্টেন, বাংলাদেশ গ্রামডাক্তার কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠন প্রভাতফেরি সহকারে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।
আমঝুপি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে মেহেরপুর আমঝুপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে তিন দিনব্যাপি শিক্ষামেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। গণসাক্ষরতা অভিযানের সহযোগিতায় মউক ও কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপ এ মেলার আয়োজন করে। আমঝুপি ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিতে বক্তব্য রাখেন মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আশাদুজ্জামান সেলিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেহেরপুর সার্কেল এসপি মো. আব্দুল জলিল। সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক মোল্লা, সাবেক আমঝুপি ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন ও কমিউনিটি এডুকেশন ওয়াচ গ্রুপ সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান। মেহেরপুর জেলা রিপোটার্স ইউনিটের সভাপতি রফিক-উল আলমের সভাপতিতে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আলহাজ আব্দুল জলিল। এদিকে সকাল সাতটার দিকে আমঝুপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, হিজুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমঝুপি আলিম মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শোকৱ্যালি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণসহ শহীদ মিনারে ফুলের তোড়া দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, অপরদিকে মেহেরপুর শহীদ ড. সামসুজ্জোহা নগর উদ্যানে আলোচনাসভা ও ভাষা সৈনিকদের সংবর্ধনা প্রদান হয়। মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে ভাষা সৈনিকদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ফরহাদ হোসেন দোদুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর হোসেন, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক ড. গাজী রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ মো. আসকার আলী। বক্তব্য রাখেন সংবর্ধিত নেতা ভাষা সৈনিক ইসমাইল হোসেন। পরে ভাষা সৈনিক ইসমাইল হোসেন ও নজির হোসেনকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
মেহেরপুর শহীদ ড. সামসুজ্জোহা নগর উদ্যানে ৫ দিনব্যাপি বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ফরহাদ হোসেন দোদুল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ও ফিতে কেটে বই মেলার উদ্বোধন করেন। মেহেরপুর মফিজুর রহমান মুক্তমঞ্চে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বই মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর হোসেন, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক ড. গাজী রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলহাজ মো. আসকার আলী, বই বিক্রেতা সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় মেহেরপুর কোর্টরোডস্থ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হেমায়েত হোসেন। সংস্থার সভাপতি এএসএম ফরিদউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার কুন্ডু, মুজিবনগর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান, জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিক-উল আলম প্রমুখ।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মেহেরপুরে শহীদ দিবস পালিত হয়েছে। প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ০১ মিনিটে মেহেরপুর শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সকাল ৭টায় প্রভাতফেরিতে অংশ নেয় মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর সরকারি শিশু পরিবার, মেহেরপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও বিএম কলেজ, মেহেরপুর কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, বিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এসএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নতুনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেহেরপুর কিডস ওয়াল্ড স্কুলসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ বেদীতে ফুল দেয়া হয়।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ পৌর পার্কস্থ শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন না করেই শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পুষ্পমাল্য অর্পণের সময় ছিলো না কোনো শৃঙ্খলা। অনেকটা অগোছালো পরিবেশে হুড়োহুড়ি করে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। প্রথমে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পুস্পমাল্য অর্পণ করে। এরপর ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, অগ্রণী সমিতি, উদীচী, বিহঙ্গ সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র, আশরাফুল আবেদীন আশা ফাউণ্ডেশন, দীপায়ন, এইড, উন্নয়ন ধারাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষ শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে সঞ্চালনা করেন ঝিনাইদহ এনডিসি (নেজার ডেপুটি কালেক্টর) বশির আহমেদ। এ সময় তিনি বারবারই ভুলভাবে বলছিলেন, ২০১৩ সালের আজকের এদিনে সকলেই পুষ্পমাল্য অর্পণ করছেন। এছাড়াও তিনি মাইকে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের জন্য আগত কাউকেই শহীদ স্মরণে নীরবতা পালন করার কথা বলেননি। নিজের ভুল বারবার ধরিয়ে দেয়া হলেও তিনি বের হতে পারেনি ভুলে ভরা সঞ্চালনার খোলস থেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সত্যতা স্বীকার করে এনডিসি বশির আহমেদ জানান, আমার পরিচালনায় কিছুটা ভুল হয়েছে। আমি কাউকেই নীরবতা পালন করার কথা বলিনি। কিছু ভুল উচ্চারণ হয়েছে। তবে আমাকে কেউ সহযোগিতা না করায় এমন ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে এমনটি আর হবে না।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে শনিবার সকালে শহরে প্রভাতফেরি বের করেন জেলা প্রশাসকসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে ৭ দিনব্যাপি বইমেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম।
দৌলতপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মরিচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে এক ইউপি সদস্য ও তার লোকজন হামলা চালিয়েছে। এতে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও শিক্ষক ৩ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে এক শিক্ষকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলার শিকার মরিচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য সাহাজুল মেম্বার ও তার লোকজন ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে উপস্থিত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন, প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান (৩৫) মারপিট করতে থাকে। এ সময় বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী ছুটে এলে সাহাজুল মেম্বার ও তার লোকজন পালিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকতার হোসেন জানান, ইউপি সদস্যের সাথে স্কুল কমিটির অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে উপজেলা পরিষদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সকালে ৩ সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণে ৱ্যালিতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকতার হোসেন। বক্তব্য রাখেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোকতার হোসেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার গেরিলা নজরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আনারুল ইসলাম, দৌলতপুর থানার ওসি বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।