সিরিজ হারলো বাংলাদেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজও বাঁচাতে পারলো না বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে ৬১ রানে হেরে মুশফিকুর রহিমদের অপ্রাপ্তির খাতায় আরেকটি পৃষ্ঠা যোগ হলো। এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে তিন ম্যাচের সিরিজ নিশ্চিত করলো অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস বাহিনী। ওয়ানডেতেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে আগামীকাল শনিবার একই ভেন্যুতে সফরকারীদের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ।

এদিন কুমার সাঙ্গাকারার শতকে ছয় উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা ২৯০ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশকে। জবাবে সাত ওভার বাকি থাকতে ২২৮ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। বড় লক্ষ্যে নেমে যেভাবে শুরু করা উচিত ছিলো সেভাবে পারেনি বাংলাদেশ। তিন বল মোকাবেলা করে প্রথম ওভারেই লাসিথ মালিঙ্গার পেসে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার শামসুর রহমান। প্রথম ম্যাচে ফিফটি পাওয়া এ ব্যাটসম্যান এদিন রানের খাতা খুলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ‍নামা মুমিনুল হককে নিয়ে অর্ধশতাধিক রানের জুটি গড়ে স্বস্তি ফেরান এনামুল হক। কিন্তু ৫৫ রানের জুটি গড়তে ফের হতাশা লাল সবুজ শিবিরে। দুজনেই ছয় রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন। সাচিত্রা সেনানায়েকের শিকার হন মুমিনুল (১৫)। সাতটি বাউন্ডারিতে সাজানো এনামুলের ৪২ রানের ইনিংস শেষ হয়ে যায় থিসারা পেরেরার বলে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট বিসর্জন দিতে থাকে স্বাগতিকরা। মাঝে অবশ্য সাকিব আল হাসান দুটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দর্শকদের উল্লাসে মাতান। কিন্তু তিনিও আউট হন ২৪ রানে। তাকে ফেরান আশান প্রিয়ঞ্জন। নাসির হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ দ্রুত সাজঘরে ফিরলে হারের পথ সহজ হয়ে যায়। নাসির অজন্তা মেন্ডিসের বলে ২২ রানে আউট হন। মাহমুদউল্লাহ নেমেই রান আউট। ৫৭ বলে ১৩তম ওয়ানডে ফিফটি পেলেও মুশফিক অপর প্রান্ত থেকে বড় ধরনের সহযোগিতা পাননি। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৭৯ রানে তাকে থামতে হয় মালিঙ্গার বলে। রুবেল হোসেনকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের জয় সুনিশ্চিত করেন সেনানায়েক।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৬৩ রানের মধ্যে রুবেল হোসেনের জোড়া আঘাত ও সোহাগ গাজীর ঘূর্ণিতে তিন উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ দারুণ শুরুর আভাস দিয়েছিলো। প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৮ রান নিলেও দ্বিতীয় ওভারে রুবেল হোসেনের বলে শামসুর রহমানের তালুবন্দি হন কুশল পেরেরা (৮)। সাঙ্গাকারাকে নিয়ে বেশি বড় জুটি গড়তে পারেননি তিলকরত্নে দিলশান। ডানহাতি পেসার নিজের চতুর্থ ওভারে এই ওপেনারকেও সাজঘরে পাঠান। গাজীর বলে শামসুরের তৃতীয় শিকার হন দিনেশ চান্দিমাল (৯)। সাঙ্গাকারা ৫২ বলে ক্যারিয়ারের ৮৪তম ফিফটি হাঁকিয়ে ইনিংস টানতে থাকেন। ৮৫ বলে চতুর্থ ম্যাচে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া প্রিয়ঞ্জন ৬০ রান করেন। ১১৪ রানের জুটিটি ভাঙতে এ ডানহাতিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন সাকিব। একই সাথে এ অলরাউন্ডার দেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির আসন গ্রহণ করেন মাশরাফির সাথে। দলের ৪৬তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ সফরকারী অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ক্যাচ মিস করেন। অবশ্য পরের দু ওভারে ভুল শুধরে দিতে পেরেছেন তিনি। সাঙ্গাকারা ও থিসারা পেরেরাকে ক্যাচ ধরে সাজঘরে ফেরান মাহমুদউল্লাহ। সাঙ্গাকারা ১২৮ রানে আরাফাত সানির শিকার হন। এর আগে বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ শতক পান ৯৮ বলে। রুবেলের তৃতীয় শিকার হওয়ার পথে থিসারা পেরেরা রানের খাতা খুলতে ব্যর্থ হন। শেষ ওভারে ৩৬ বল মোকাবেলা করে ম্যাথুস দেখা পান ১৭তম হাফ সেঞ্চুরির। মুমিনুল হক শেষ দু ওভার কিথুরুয়ান ভিথানাগের সহজ দুটি ক্যাচ মিস করেন। ম্যাথুস ৫৬ ও ভিথানাগ ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।