বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে এক ইঞ্জিনে ৪ ট্রলি টানার কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা

কেরুজ চিনিকলের ট্রাক্টরের ট্রলির ধাক্কায় গুরুত্বর আহত স্কুলছাত্রী

নজরুল ইসলাম: কেরুজ চিনিকলের পরিবহন বিভাগের ট্রাক্টর চালকদের অনেকেই অতিরিক্ত সুবিধা নিয়ে বড় ধরনের ঝুঁকি নিচ্ছে। একটি ইঞ্জিনের পেছনে ৪টি ট্রলি টেনে নিচ্ছে মিলের বিভিন্ন ইক্ষুক্রয় কেন্দ্রে। এতে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। এ রকমই দুর্ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার দোস্তবাজারে। ৪ ট্রলি বিশিষ্ট ট্রাক্টরের পেছনের ট্রলির ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয়েছে স্কুলছাত্রী শারমিন। স্কুলে কতোদিন যেতে পারবে না তা নিয়ে শঙ্কিত হতদরিদ্র ঘরের স্কুলছাত্রী শারমিন।

জানা গেছে, ইঞ্জিনের পেছনে কী ঘটছে তা জানতে পারে না চালক। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে প্রায় একটি ইঞ্জিনের পেছনে ৪টি ট্রলি (যার ট্রলি নং ২১০, ২১১, ১৬৪, ১৭৩) একসাথে নিয়ে সকাল পৌনে ৯টার দিকে কেরুজ মিলগেট থেকে দশমাইল ইক্ষুক্রয় কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দেয় ট্রাক্টর চালক আনছার আলী। ট্রাক্টরটি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দোস্তবাজার নামক স্থানে পৌঁছুলে পেছনের ট্রলির ধাক্কা মারে সাইকেল আরোহী স্কুলছাত্রীকে। বাজারের লোকজন দোস্তগ্রামের আবুবাক্কার মেয়ে হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী শারমিনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় দর্শনার একটি হাসপাতালে। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, শারমিনের ডান পায় চিড় ধরেছে এবং হাঁটুর নিচের অংশ সরে গেছে। সুস্থ হতে বেশকিছুদিন সময় লাগবে। ফলে দীর্ঘ দিন বিছানায় শুয়ে কাটাতে হবে তাকে। এদিকে কেরুজ ট্রাক্টর চালকেরা প্রায় একটি ইঞ্জিনের পেছনে ৪টি করে ট্রলি একসাথে লাগিয়ে মফস্বল এলাকার সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে দোস্তবাজারের লোকজন। ঝুঁকি জেনেও কী কারণে এবং কেন চালকেরা এ ধরনের ঝুঁকি নেয়? আর কর্তৃপক্ষই বা এসব চালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না তা বোধগম্য নয় সচেতনমহলের। দীর্ঘদিন বিছানায় শুয়ে কাটাতে হবে শারমিনকে এ কথা শুনে শঙ্কিত শারমিন। তার একটাই প্রশ্ন তাহলে কী আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে? পিতা না থাকায় মেয়ের স্কুলে যাওয়ার জন্য মা কিনে দিয়েছে একটি বাইসাইকেল। তাও আবার ভেঙে গেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। সুস্থ হলে মেয়ে কিসে যাবে স্কুলে সে দুঃশ্চিন্তা শারমিনের মায়ের। বিষয়টি তাৎক্ষণিক কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমানকে অবহিত করা হলে তিনি শারমিনের সু-চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে চিনি উৎপাদনের জন্য কেরুজ চিনিকলের নিজেস্ব বাণিজ্যিক খামারে আখ লাগিয়ে থাকে। আর বাণিজ্যিক খামারগুলো অধিকাংশ মফস্বল এলাকায়। মফস্বল এলাকার রাস্তাগুলো ১০ থেকে ১২ ফুট চাওড়া। একটি ট্রাক্টর চলাচল করলে বিপরীত দিক থেকে কোনো যানবাহন অথবা পেছন দিকে থেকে কোনো যানবাহনকে ওভারটেক করতে হলে ওই সমস্ত রাস্তাগুলোতে খুব একটা জায়গা থাকে না। বিষয়টি প্রতিটি চালক জানে। জেনেও তারা এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করে থাকে। এ দিকে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে কেরুজ কর্তৃপক্ষ  কি ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা জানা যায়নি।