মাথাভাঙ্গা মনিটর: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সেদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্তে অনেক দেরির কারণে গতকাল মঙ্গলবার আদালত এ রায় দেয়। তবে তাদের মুক্তির বিষয়টি তামিলনাড়ু সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীকে হত্যার পর ১৯৯৮ সালে দোষী সাব্যস্ত ও ফাঁসির দণ্ড পেয়েছিলেন পেরারিভালান, সান্থন ও মুরুগান নামের এই তিনজন। এর দু বছর পর তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন। কিন্তু গত ১১ বছরেও এ আবেদনের কোনো জবাব আসেনি। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনে সিদ্ধান্তে অকারণে দীর্ঘসূত্রিতার ফলে মৃত্যুদণ্ড মওকুফ হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ১৫ জন ফাঁসির আসামির মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করে। এ তিন আসামিও দেরির কারণ দেখিয়ে ফাঁসি মওকুফের আবেদন জানান। তারা দাবি করেন ফাঁসির আসামি হয়ে জেল খাটতে তাদের প্রবল মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। কিন্তু গত ৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে শুনানিকালে কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল জিই বাহনভতী এ আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, এ তিন আসামি তাদের আবেদনে জেলে গঠনমূলক কাজে অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছে। ফলে তারা কীভাবে আর মানসিক চাপে থাকে? তবে প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মতে, ওই তিন আসামি গঠনমূলক কাজে অংশ নেয়ায় ভেবে নেয়া যেতে পারে তারা দাগী অপরাধী নন। এছাড়া গঠনমূলক কাজে অংশ নিলেই মনে করার কারণ নেই যে তারা মনোকষ্টে নেই।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ওপর আমরা হস্তক্ষেপ করলাম বলে এটা মোটেই আনন্দের নয়। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় সরকারের গড়িমসি নিন্দনীয়। তামিলনাড়ু সরকার যদি এরপর অপরাধীদের যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে তাদের মুক্তিও দিতে চায় তবে কোনও আপত্তি নেই সুপ্রিম কোর্টের। এর আগে মুরুগানের স্ত্রী নলিনীকে ক্ষমা করে ফাঁসির সাজা বাতিল করেছিলেন রাজীব-পত্নী সোনিয়া গান্ধী। গত ১০ বছর ধরে ইউপিএ সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেও রাজীব হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর না করার কারণ নিয়ে জল্পনা কল্পনা কম হয়নি।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে ২১মে তামিলনাড়ুতে নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে এলটিটিইর মানববোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন রাজীব গান্ধী।