দামুড়হুদা চাঁদপুরে ধর্ষণ অপচেষ্টার শিকার গৃহবধূর পাশে লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দ

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছে মাতবররা

 

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদা উত্তর চাঁদপুরে ধর্ষণ অপচেষ্টার শিকার গৃহবধূ মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না। তাকে হুমকির মধ্যে রাখা হয়েছে। গ্রামের কতিপয় মাতবর সালিসের নামে অভিযুক্তদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। সে টাকাও তাদের পকেটে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছে মাতবররা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে গিয়ে এমনই তথ্য পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই গৃহবধূ জানিয়েছেন, গত রোববার আমার স্বামি বাড়ি ছিলো না। ৫ বছর বয়সী শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। রাত দেড়টার দিকে ৪ যুবক বেড়া কেটে আমার ঘরের প্রবেশ করে গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে জিম্মি করে। প্রথমে ধারণা করেছিলাম হয়তো ডাকাতদল হবে। পরে তারা আমাকে ধর্ষণের অপচেষ্টা চালায়। এ সময় আমার ৫ বছর বয়সী শিশুসন্তানকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ধারালো হেঁসো কেড়ে নিয়ে চিৎকার দিলে তারা ঘর থেকে বেরিয়ে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। আমি পিছু নিই। আমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তারাও পিছু নেয়। তিনজন পালিয়ে গেলেও মদন কুমারের ছেলে বিল্লাল (২২) নিজ বাড়িতে ওঠে। এ সময় তাকে হাতেনাতে ধরা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, মসলেমের ছেলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ইব্রাহিম (১৩), শুকুর আলীর ছেলে শাহিন (২৫)  ও সামাদের ছেলে রাজন তার ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। রাতেই গ্রামে ঘটনা জানাজানি হলে সালিসের প্রস্তুতি চলে। ঝিরঝির বৃষ্টি আর গৃহবধূর স্বামী বাড়ি না থাকায় তা ভেস্তে যায়। পরদিন সোমবার সকালে গ্রামের সালিসে আয়োজন করে অভিযুক্তদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দাবি করলে শেষমেশ ২০ হাজার টাকায় রফা হয়। সেই টাকা মাতবরদের কাছেই আছে। গৃহবধূ আরো জানান, মাতবররা হুমকি দিয়ে বলেছে, মামলা করলে গ্রাম থেকে তুলে দেয়া হবে। গরু চুরির অভিযোগ দিয়ে স্বামীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হবে। এখন মামলা করবো কীভাবে? জান নিয়েই চলছে টানাটানি।

এ বিষয়ে গ্রামের মাতবর আকবর আলী জানান, গ্রামের বিষয় সালিসে অভিযুক্তদের বেত্রাঘাত ও জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা আমাদের কাছে আছে। ওই গৃহবধূ টাকা নিলে দেয়া হবে। না নিলে গ্রামের উন্নয়নকাজে লাগানো হবে।

গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দ ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আইনি সহায়তা প্রদানের কথা জানালেও তারা মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না।