মেহেরপুরে সদর উপজেলা নির্বাচন জমে উঠেছে : প্রার্থীদের জোর প্রচারণা

সেয়ানে সেয়ানে তুমুল প্রতিদন্দ্বিতার পথে ভোটযুদ্ধ

মেহেরপুর অফিস: আর মাত্র দু দিন পরে মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচন। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। অবিরাম ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোটপ্রার্থনা করছেন। তবে ভোটাররা এলাকার উন্নয়ন ও বিপদ-আপদে যাকে পাশে পাবেন তাকেই নির্বাচিত করবেন। রাস্তাঘাট, অফিস, আদালত ও চায়ের দোকানসহ সবখানেই চলছে ভোটের হিসাব-নিকাশ। চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তথা ১৯ দলীয় জোট একক প্রার্থী দেয়ায় সেয়ানে-সেয়ানে লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী-বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলা নির্বাচনে ৭০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসায় মাঠে ফিরে এসেছে নির্বাচনী উত্তাপ। ভেটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থীরা। বসে নেই মহিলা প্রার্থীরাও। তারাও গণসংযোগের মাধ্যমে ভোটরদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। তবে বিধি মোতাবেক আজ সোমবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে আজ সোমবার থেকে মেহেরপুরে সেনা মোতায়েন থাকছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে গতকাল রোববার বিকেলে ১১ পদাতিক ডিভিশনের বগুড়া সেনানিবাসের ২৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির মেজর সৈয়দ গোলাম মুরতাজার নেতৃত্বে ১১৬ জন সেনা সদস্য মেহেরপুরে পৌঁছেছে।

চেয়ারম্যান পদে সদর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ গোলাম রসুল (আনারস), ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মারুফ আহম্মেদ বিজন (কাপ-পিরিচ), ভাইস চেয়ারম্যান পদে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব বিশ্বাস (টিউবওয়েল), পৌর জামায়াতের আমির মাও. মাহাবুবুল আলম (চশমা), বিএনপি একাংশের নেতা প্রফেসার ফয়েজ উদ্দীন (তালা), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা বিএনপির সহসভাপতি রোমানা আহম্মেদ (কলস) ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত সামিউন বাশিরা পলি (হাঁস) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৭৮ হাজার ৭০৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৮ হাজার ৫৮ এবং মহিলা ভোটার ৯০ হাজার ৬৪৯।

মেহেরপুরের উন্নয়ন করার জন্য প্রার্থী হয়েছেন বলে জানান আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ গোলাম রসুল। নির্বাচিত হলে রাস্তাঘাট, বিদ্যুত, স্কুল-কলেজের উন্নয়নসহ আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। এছাড়াও এলাকার রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত থাকাসহ এলাকার মানুষের দাবি-দাওয়ার পক্ষে থাকায় এবং সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা তাকেই নির্বাচিত করবেন বলে তিনি জানান।

এলাকার মানুষের দাবি-দাওয়া আদায়ের পক্ষে থাকায় ও সৎ, যোগ্য প্রার্থী হিসেবে এবং ১৯ দলের আন্দোলনে সব সময় রাজপথে থাকার কারণে মানুষ তাকে নির্বাচিত করবে বলে জানালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. মারুফ আহম্মেদ বিজন। নির্বাচিত হলে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নসহ সব সময় জনগণের পাশে থাকবেন বলেও জানান তিনি।

তবে ভোটাররা জানিয়েছেন, সুখ-দুঃখে যাকে কাছে পাওয়া যাবে, দেশের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদিত রাখবেন এমন প্রার্থীকে ভোট দেবেন। রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, ৭০টি কেন্দ্রে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে তার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে।