বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের আশঙ্কা : সহিংসতা বাড়তে পারে

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি চলছে তা অব্যাহত থাকলে তাদের ঠেকানো নাও যেতে পারে৷ তবে ইসলামি চিন্তাবিদরা এধরনের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছেন৷

আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ প্রচারিত ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের ইসলাম বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানে উদ্বিগ্ন নিরাপাত্তা বিশ্লেষক এবং মানবাধিকার নেতারা। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রশীদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, আল কায়েদা একটি মতবাদ। আর এ জঙ্গি মতবাদের অনুসারী বাংলাদেশে যে নেই তা বলা যাবে না। তিনি বলেন, আল কায়েদা সরাসরি বাংলাদেশে কাজ না করলেও তাদের আদশের্র অনুসারী জঙ্গি সংগঠন বাংলাদেশে আছে। আর আয়মান আল-জাওয়াহিরির আহ্বানে তারা যে উজ্জ্বীবিত হবেন তা বলাই যায়। এ জন্য সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। তবে তিনি মনে করেন, জনতার প্রতিরোধের যে আহ্বান জানানো হয়েছে তা কাজে আসবে না। কারণ এদের সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ এখন বেশ সচেতন। তবে তাদের অনুসারীরা সহিংসতা বাড়াতে পারে।

এদিকে মানবাধিকার নেতা নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, আইনের শাসন না থাকলে দেশে অনাচার, অবিচার এবং সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্ভব ঘটে প্রতিরোধের নামে। বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি চলছে তা অব্যাহত থাকলে এখানে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটার আশঙ্কা আছে। আল কয়েদার মতো জঙ্গি সংগঠন এর সুযোগ নেবে। নূর খান বলেন, সমাজ দু ভাগে ভাগ হয়ে গেলে মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ মানুষের প্রয়োজন হয়। দল নিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে শুধু জঙ্গিবাদের উত্থান নয়, আরো অনেক সংকট দেখা দিতে পারে।

অন্যদিকে ইসলামী ঐক্যজোটোর সাবেক নেতা মাওলানা মুহীউদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, আল কায়েদা যে আহ্বান জানিয়েছে তার সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের ইসলাম প্রিয় আলেমরা সন্ত্রাস পছন্দ করেন না ৷ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের নামে কোনো সন্ত্রাস এ দেশের মুসলমানরা গ্রহণ করে বলে মনে করেন না তিনি। বাংলাদেশের ‘ইসলাম বিরোধীদের প্রতিরোধে আল কায়েদার বর্তমান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ প্রচারিত ভিডিও বার্তার তদন্ত হচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, র‌্যাবের উপমহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান।  তিনি শনিবার রাতে জানান, ভিডিও বার্তাটি তারা সংগ্রহ করেছেন। এর উৎস এবং অন্যান্য দিক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ আহ্বানের পেছনে আরো কোনো উদ্দেশ্য আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার মতে, ধারাবাহিক অভিযানের ফলে বাংলাদেশের শীর্ষ জঙ্গিরা এখন কারাগারে। তাই জঙ্গি তৎপরতা আর আগের মতো নেই। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আল কায়েদার উপস্থিতি বা তাদের সাথে যুক্ত কোনো জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতির তথ্য তাদের কাছে।