আলমডাঙ্গার গড়গড়ীতে রাস্তা নির্মাণকাজে ব্যবহৃত রোলারচালক সটকালেও জনতার হাতে ঠিকাদার আটক : পুলিশি হস্তক্ষেপ
অনিক সাইফুল: চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার গড়গড়ী গ্রামের রাস্তায় রোলারের চাকায় পিষ্ট হয়ে পিতা-মাতার একমাত্র শিশুপুত্র নিহত হয়েছে। রাস্তার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারকে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করেছে গ্রামবাসী। নাতির মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মাথায় চাচাতো দাদার মৃত্যু হয়েছে। গড়গড়ী গ্রামে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে সান্ত্বনা খুজে পাচ্ছে না পিতা-মাতা। তাদের আর্তচিৎকারে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের গড়গড়ী গ্রামের পূর্বপাড়ার রাস্তা নির্মাণকাজে ব্যবহৃত রোলার ড্রাইভারের অদক্ষতা ও অসাবধানতায় চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই গড়গড়ী গ্রামের হারান মণ্ডলের একমাত্র সন্তান শিশুপুত্রের করুণ মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ পেয়ে রোলারটিকে গ্রামবাসী আটক করে। ড্রাইভার কৌশলে পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে রাস্তার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার চুয়াডাঙ্গার আবু জাফর ঘটনাস্থলে গেলে গ্রামবাসী গ্রামের মসজিদের একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে স্থানীয় ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঠিকাদার বাড়ি ফেরেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে শিশু সম্রাটের দাফন সম্পন্ন করা হয়। দাফন শেষে বাড়ি ফেরার পথে সম্রাটের দাদার আকস্মিক মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত ১১ জানুয়ারি থেকে আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ গড়গড়ী পূর্বপাড়ার ১০২ মিটার কাঁচারাস্তা পাকাকরণের কাজ চলছে। কয়েকদিন আগে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৩নং রোলার রাস্তার খোয়া সমান করার কাজে নিয়োজিত করে ঠিকাদার। গতকাল বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাঝেরপাড়ার রোলারড্রাইভার বিল্লাল রোলারটি চালিয়ে রাস্তার খোয়া সমান করার কাজ করছিলো। এ সময় একই গ্রামের হারান মণ্ডলের একমাত্র সন্তান শিশুপুত্র সম্রাট (৬) রাস্তায় অন্য বন্ধুদের সাথে খেলা করছিলো। রোলারটি গ্রামের মওলার বাড়ির সামনে এলে শিশুটি রোলারে ওঠার চেষ্টা করে। এ সময় রোলারের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সে। গ্রামবাসী অভিযোগ করে জানায়, রাস্তারকাজে নিয়োজিত রোলারের সামনে পিছনে দুজন করে লেবার থাকার কথা থাকলেও কাজ শুরু হওয়া থেকে কোনো লেবার নেই। রাস্তায় পানি দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে না। শুরু থেকে রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে ঠিকাদার আবু জাফর বলেন, আসলে রোলারের সামনে-পেছনে লোক থাকার কথা ছিলো। কেন লোক নেয়া হয়নি আমি জানি না। এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন।