বিশ্ব ভালবাসা দিবস আজ


স্টাফ রিপোর্টার: আজ শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস। দীর্ঘ এক বছর পর আবারো এ দিনটি এসে দাঁড়িয়েছে সবার দুয়ারে। মনকে ভালবাসার রঙে রাঙিয়ে দিতেই যেন এ আগমন। তিল তিল করে মনের গহীনে যে ভালবাসার সৃষ্টি তা এ দিনে প্রকাশ করে অনেকেই। আর যারা ইতোমধ্যে প্রেম-যমুনায় অবগাহন করেই ফেলেছে তারাও নতুন কমিটমেন্ট নিয়ে ভালবাসার স্বপ্নীল ভূবনে ডুবে যাবে।

কিভাবে এলো ভ্যালেন্টাইন ডে? প্রায় সাড়ে ১৭শ বছর আগের কথা। রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস। তিনি প্যাগান মতে বিশ্বাসী ছিলেন, অর্থ্যাৎ দেব-দেবীর পূজা করতেন। এদিকে রোম নগরীতে প্রচারিত হচ্ছে খ্রিস্টধর্ম। ক্রমশই প্রচার ও প্রসার হচ্ছিলো তা। প্রচারের কাজে ছিলেন গুটিকয়েক সেন্ট বা পাদ্রি। তাদেরই একজন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ভাবলেন যুগযুগ ধরে চলে আসা পূর্বপুরুষের বিশ্বাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি গ্রাস করে নেবে যীশু প্রবর্তিত খ্রিষ্টধর্ম। রাজ্যে একি অনাসৃষ্টি। তিনি সে সময় ঘোষণা করলেন খ্রিস্টধর্ম প্রচার করা রোমান রাজ্যে নিষিদ্ধ। আদেশের এক চুল এদিক ওদিক হলেই মৃত্যুদণ্ড। ধর্ম প্রচারক পাদ্রিরা সম্রাটের আদেশের চেয়ে প্রভুর আদেশ ও শেষ দিনের শান্তিকেই বড় করে দেখলেন। সম্রাটের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে তারা অব্যাহত রাখলেন খ্রিস্টধর্মের প্রচার।

হঠাৎ একদিন খ্রিস্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে আটক হলেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। রাজার আদেশ অমান্য করার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হলেন তিনি। অবশ্য রাজা ক্লডিয়াস চাইলেন, ভ্যালেন্টাইন রোমান প্যাগান ধর্ম গ্রহণ করুক। খ্রিস্টধর্ম পরিত্যাগ করে তা প্রচারে আত্মনিয়োগ করুক। আর ভ্যালন্টাইনের কাছ থেকে রাজ্যের সবাই শিক্ষা নিক। ক্লডিয়াসের পক্ষ থেকে ভ্যালেন্টাইনের কাছে প্রস্তাব এলো, যদি খ্রিস্ট-মত পরিহার করো এবং রোমান প্যাগান মতে দীক্ষিত হয়ে তা প্রচার কর। তবে আমি তোমার মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করবো।

এ সময় ভ্যালেন্টাইন সম্রাটকে পাল্টা প্রস্তাব দিলেন আপনি দেব-দেবীর পূজা পরিহার করে খ্রিস্টধর্ম অবলম্বন করুন। কথা শুনে সম্রাট রেগে তার মৃত্যুদণ্ড বলবৎ রাখার আদেশ দেন। সেন্টকে পাঠানো হয় কয়েদখানায়। সেখানে তিনি এক অলৌকিক কাণ্ড ঘটান। দূর থেকে একটি মেয়েকে লক্ষ্য করতে থাকে। মেয়েটিকে কাছে থেকে দেখার আগ্রহ জাগে তার। তিনি মেয়েটিকে মনেমনে ভালবাসতে থাকেন। সেই মেয়েটি ছিলো কয়েদখানর সেনাধ্যক্ষ অ্যাস্টারিয়াসের কন্যা নাম তার জুলিয়া। দেখতে অপূর্ব সুন্দরী হলেও ছিলো অন্ধ। তারপরও সেন্ট ভ্যালেন্টাইন তাকে ভালবেসেছে। তার অলৌকিক চিকিৎসা দিয়ে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন।

এ কথা শুনে সম্রাট ক্ষুব্ধ হয়ে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে ভ্যালেন্টাইন জুলিয়াকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লিখে যান। চিঠির শেষাংশে লেখা ছিলো ইয়োর ভ্যালেন্টাইন’ ‘your valentine’। ভ্যালেন্টাইনের প্রেমের কথা প্রথমে না জানলেও পরে তা চাপা থাকেনি। এর পর থেকে সবাই ভ্যালেন্টাইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবস পালন করে থাকে।