ইবি প্রতিনিধি: আজ সোমবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০১৪’র নির্বাচনে এবার চরম প্রতিযোগিতা হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিএনপি- জামায়াতপন্থি শিক্ষকরা অধিকাংশ পদে জিতে থাকলেও এবারে তা উল্টো ফল হতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। এদিকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী ও প্যানেলের চূড়ান্ত তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে আওয়ামী লীগ ও প্রগতিশীলপন্থি শিক্ষকরা আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং শাপলা ফোরাম নামে দু সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এই প্রথম তারা একজোট হয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন করতে যাচ্ছে। ফলে গত পাঁচ বছরে প্রায় ১০০ শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ফলে আওয়ামী লীগ ও প্রগতিশীলপন্থি শিক্ষকদের সংখ্যা বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষদের থেকে বেশি। এর আগে তাদের মধ্যে সাপে নেউলে সম্পর্ক থাকলেও এখন তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছে বলে জানা যায়।
নির্বাচন কমিশনসূত্রে জানা গেছে, ১৫ সদস্য বিশিষ্ট এক বছরের জন্য নির্বাচিত এ কমিটির নির্বাচনে শিক্ষকদের ২টি প্যানেলের নাম জমা পড়েছে। প্যানেলগুলো হলো- আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও প্রগতিশীল শাপলা ফোরামের সমন্বিত একক প্যানেল এবং বিএনপি সমর্থিত জিয়া পরিষদ ও জামায়াত সমর্থিত গ্রীন ফোরাম সমন্বিতভাবে একক প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে জানা যায়। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও প্রগতিশীল শিক্ষক প্যানেল থেকে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল আহসান চৌধুরী সভাপতি পদে ও ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রাশিদ আসকারী সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেল থেকে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান সভাপতি এবং দাওয়াহ বিভাগের অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
নির্বাচনে অপর প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শিক্ষকরা হলেন- আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও প্রগতিশীল শিক্ষকদের যৌথ প্যানেল থেকে সহসভাপতি পদে অধ্যাপক আ.ন.ম রেজাউল করিম (অর্থনীতি), যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক সাইদুর রহমান (বাংলা), কোষাধ্যক্ষ পদে অধ্যাপক মামুনুর রহমান (ইংরেজি)। এছাড়া সদস্য প্রার্থীরা হলেন অধ্যাপক মনিরুজ্জামান (রসায়ন), অধ্যাপক রুহুলকে এম সালেহ (ইতিহাস), অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান (ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং), অধ্যাপক আহসানুল আম্বিয়া (কম্পিউটার সায়েন্স), সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন (ব্যবস্থাপনা), অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন (ইতিহাস), অধ্যাপক এএইচএম আক্তারুল ইসলাম (ইংরেজি), অধ্যাপক রেজওয়ানুল ইসলাম (বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং) ও তারেক হাসান (ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং)।
অপরদিকে জিয়া পরিষদ-গ্রীণ ফোরামের যৌথ প্যানেল থেকে সহসভাপতি পদে অধ্যাপক আবুল বারাকাত মো. ফারুক (আল কোরআন), যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পদে মুস্তাফিজুর রহমান (আল হাদিস), কোষাধ্যক্ষ পদে আসাদুদ্দৌলা বুলবুল (খাদ্য ও পুষ্টি)। এছাড়া সদস্য প্রার্থীরা হলেন- অধ্যাপক আফাজউদ্দিন (দাওয়াহ), অধ্যাপক শহীদ মো. রেজওয়ান (দাওয়াহ), সহযোগী অধ্যাপক মিজানুর রহমান (বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং), অধ্যাপক আলীনুর রহমান (ব্যবস্থাপনা), অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন (আরবি), অধ্যাপক এম এয়াকুব আলী (আল কোরআন), জাহিদুল ইসলাম (পদার্থ বিজ্ঞান), অধ্যাপক নুরুন্নাহার (আইন), ফখরুল ইসলাম (রাষ্ট্রনীতি ও লোকপ্রশাসন), আবুল কাশেম তালুকদার (খাদ্য ও পুষ্টি)।
আসন্ন এ নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম আলাদাভাবে নির্বাচন করে আসছিলো। ফলে দীর্ঘদিন যাবত তারা কোনো বিজয়ের মুখ দেখতে পাননি। এবার এ দুটি সংগঠন এক প্যানেলের অধীনে নির্বাচন করায় এ প্যানেলের শিক্ষকরা নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এ প্যানেলের শিক্ষকরা নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে শিক্ষকদের মাঝে গণসংযোগ করছেন।
আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও প্রগতিশীল শিক্ষক প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক রাশিদ আসকারী বলেন, ‘দীর্ঘদিন আমাদের প্রগতিশীল শক্তির মধ্যকার অনৈক্য ছিলো অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার, তবে প্রগতিশীল শিক্ষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়ায় পূর্ণ প্যানেলে জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষক প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন, ‘আসন্ন নির্বাচনে প্রতিবারের মতো এবারও আমরা একই প্যানেলের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। এ নির্বাচনে সকলের সহযোগিতা নিয়েই আমরা প্যানেলসহ জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’