৪ বছর কারাভোগের পর স্বজনদের কাছে ফিরলেন রুবেল মনির ও পিন্টু

দর্শনা জয়নগরে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক : বাংলাদেশি তিন নাগরিককে ফেরত

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা জয়নগর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে ৩ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। ৪ বছর সেল্টার হোম ও কারাভোগের পর বাংলাদেশি তিন যুবক ও কিশোর নাগরিক ফিরলো স্বজনদের কাছে।

darsana pic

জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর হোগলাকান্দির ফিরোজ মোল্লার ছেলে মনিরুল ইসলাম মোল্লা (১৭) একই ইউনিয়নের নর্থখোলা পশ্চিমপাড়ার বিশু মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়াকে (১৬) ২০১১ সালের ৫ মে প্রতিবেশী নলিত কুমার মণ্ডল কাজ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নেয়। হিলি সীমান্ত পথে রুবেল ও মনিরকে ভারতে পাচার করে নলিত। ভারতের শিশু পাচারকারীচক্রের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগে করেছে দু কিশোরের স্বজনেরা। এ ঘটনায় নলিতের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করার কথাও জানিয়েছে তারা। সে থেকে নলিত রয়েছে পালাতক।

এদিকে পরদিন ৬ মে ভারতের নদীয়া জেলার নবদিপ ভালুকা বটতলা নামকস্থানে পুলিশ দেখে মনির ও রুবেলকে ফেলে পালিয়ে যায় পাচারকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে ভারতীয় নবদিপ থানা পুলিশ মনির ও রুবেলকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃতদের বয়স ১৩ ও ১৪ বছর হওয়ায় তাদের কৃষ্ণনগর জগিনীপুর ঘুর্ণি সেল্টার হোমে রাখা হয়। এছাড়া কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুণ্ডি মাঠপাড়ার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে পিন্টু (২৭) গত ৪ বছর আগে জামালপুর সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। সেদিনই পিন্টুকে ভারতের হোগলবাড়িয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ পিন্টুকেও অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে ওই সেল্টার হোমে রাখা হয়। সেখানে ৪ বছর থাকতে হয়েছে পিন্টুকে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দর্শনা জয়নগর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এ তিন বাংলাদেশি যুবক ও কিশোরকে ফেরত দিয়েছে। প্রায় ১ ঘণ্টাব্যাপি অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে ছিলেন দর্শনা বিজিবি কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল আউয়াল, নিমতলা ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার মহাসীন আলী, হাবিলদার শওকত আলী, ল্যান্সনায়েক রেজাউল ইসলাম, দামুড়হুদা থানার এসআই আবু জাহের ভূইয়া, দর্শনা ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ এসআই মাহবুবুর রহমান, ভারতের পক্ষে ছিলেন, গেদে বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার বিবি বিশ্বাস, ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার তন্ময় চৌধুরী, ইন্দ্রোজিত ভট্টাচার্য, কৃষ্ণনগর থানার এএসআই রবিন্দ্রনাথ প্রমুখ। পরে বিএসএফ সদস্যরা তিন বাংলাদেশি যুবক ও কিশোরকে বিজিবির হাতে সোপর্দ করেন। বিজিবির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে থানা পুলিশে। গতকালই স্বজনদের সাথে আপন আপন ঠিকানায় ফিরেছেন পিন্টু, রুবেল ও মনির।