উপজেলা নিবার্চনে সেনা চেয়ে চিঠি দিচ্ছে ইসি

তৃতীয় ধাপের তফশিল ঘোষণা যেকোনো সময়ে : ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে ১৩ নির্দেশনা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার কমিশন থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় উপজেলা পর্যায়ে অবস্থান করে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, গতবারের মতো এবারও সেনাবাহিনী উপজেলা নির্বাচনে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এদিকে তৃতীয় ধাপের শতাধিক উপজেলা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আজ অথবা রোববার এ তফশিল ঘোষণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি রিটার্নিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।

কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভোট গ্রহণের আগে ও পরে মোট পাঁচদিনের জন্য (যাতায়াত সময় ছাড়া) সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা ও নৌ) সদস্য মোতায়েন করা হবে। তবে নির্বাচনী দায়িত্বে সশস্ত্রবাহিনীর কত সদস্য থাকবে-সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।

তৃতীয় ধাপের যে শতাধিক উপজেলার তফশিল ঘোষণা করা হচ্ছে তার নির্বাচন ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ছয়টি ধাপে ৩ মের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা থাকলেও তা এগিয়ে এনে ৩১ মার্চের মধ্যে সব উপজেলার নির্বাচন করার কথা ভাবছে কমিশন। তৃতীয় ধাপের তফশিল প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, মধ্য মার্চকে টার্গেট করে বৃহস্পতিবার বা আগামী রোববার তফশিল ঘোষণা দেয়া হবে। সামনে বর্ষাকাল তাই চার থেকে পাঁচ ধাপে আমরা নির্বাচন শেষ করবো। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কমিশনের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে করার নির্দেশনা দেয়া আছে। আইন ভঙ্গকারীদের শাস্তি দিতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

কমিশনের ১৩ নির্দেশনা: উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশের পাশাপাশি নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দেয়া হলফনামা স্ক্যান করে সিএমএস পদ্ধতিতে দ্রুততর সময়ের মধ্যে অবশ্যই প্রেরণ করতে হবে। হলফনামার কপি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য রিটার্নিং অফিসারদের উন্মুক্ত রাখতে হবে। সেই সাথে কেউ যদি লিখিতভাবে হলফনামার জন্য আবেদন করেন তবে নিজ খরচে ফটোকপি করে নিতে পারবেন। এছাড়া নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে চিঠিতে ১৩ নির্দেশনা দেয়া হয়। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী প্যানেল প্রস্তুত ও নিয়োগ, নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন, ভোটকেন্দ্র অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা চূড়ান্তকরণ, দক্ষ, অভিজ্ঞ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ, মহিলা ভোটকক্ষের জন্য মহিলা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ।

কমিশন থেকে পাঠানো অপর এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীর কেউ মৃত্যুবরণ করলে অবশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন, ভোটের সময়, দিনক্ষণ ও স্থান নির্ধারণ করে জনসাধারণকে অবহিতকরণ, প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক সরাসরি ইসিতে ডাকযোগে ফলাফল প্রেরণ, ভোটকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা, বন্ধ ঘোষিত ভোটকেন্দ্রে পুনঃভোট গ্রহণ, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার, নির্বাচনী দ্রব্যাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যালট পেপার যাচাইসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।