জেলা লোকমোর্চা টিমের সরেজমিন পরিদর্শন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার দর্শনা তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমানের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার কেয়ার বিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। আর এ বিয়েকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে দর্শনায়। দর্শনাবাসীর কাছ থেকে ঘটনা জেনে সত্যতা জানার জন্য জেলা লোকমোর্চার সভাপতির নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল গতকাল মঙ্গলবার দর্শনায় যান। বিয়ে উপলক্ষে দর্শনা তদন্তকেন্দ্র বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করার পাশাপাশি গেট তৈরি করা হয়েছে। সম্ভাব্য অতিথিদেরকে দাওয়াতও দেয়া হয়েছে।
দর্শনা বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার কেয়ার বিয়ে ঠিক করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের জিরাট গ্রামের মান্নান হোসেনের ছেলে শামীমের সাথে। শামীম পুলিশের কনেস্টবল পদে চাকরিরত। বিয়ের দিন ঠিক হলেও সুমাইয়া আক্তার কেয়ার বয়স নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। দর্শনার স্থানীয় মানুষ এ বিয়েকে বাল্যবিয়ে দাবি করেছে। শুধু দর্শনা নয়, চুয়াডাঙ্গা জেলাজুড়ে এ বিয়ে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। অনেকেই জেলা লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে মেয়ের বাবা এসআই মিজানুর রহমানকে বাল্যবিয়ের বিষয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মনে করিয়ে দেন। প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সনি, নির্বাহী সদস্য মানিক আকবর, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, দামুড়হুদা উপজেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জেলা লোকমোর্চার সচিব শাহনাজ পারভীন শান্তি, সাবেক সচিব নুঝাত পারভীন ও সিডিএফএ’র সমন্বয়কারী আসমা হেনা চুমকী।
এসআই মিজানুর রহমান এ সময় মেয়ের বয়স ১৮ বছরেরও বেশি বলে দাবি করে বলেন, আমার মেয়ে একসময় মাদরাসায় পড়াশোনা করতো। যে কারণে পাঁচ বছর সাধারণ পড়াশোনা করতে পারেনি। তিনি লোকমোর্চার প্রতিনিধিদলকে খুলনার দীঘলিয়া থানার গাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের স্বাক্ষরিত মেয়ের জন্ম সনদ দেখান। জন্মসনদে গ্রামের বাড়ি ওই ইউনিয়নের মুসলিমডাঙ্গা এবং মেয়ের জন্মতারিখ পয়লা জানুয়ারি ১৯৯৬ খ্রিস্টবাদ দেখানো হয়। জন্মসনদটি গত ১ ফেব্রুয়ারি সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন জানান, দর্শনা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মিজানুর রহমান বিয়ের আয়োজন করেছে তা নিয়ে বিতর্ক ওঠায় সাভাবিক। কারণ মিজানুর রহমানের নিজের বর্ণনা অনুযায়ী নিজে বিয়ে করেছেন ১৯৯৪ সালের মার্চ মাসে এবং সন্তান হয়েছে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর পর। সে হিসেবে মেয়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ১৮ বছরের নিচে কাউকে বিয়ে দেয়া বর্তমান বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে গ্রহণযোগ্য নয়।