চুয়াডাঙ্গার নাটুদা আটকবরে শহীদ স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর হুইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দার এমপি

শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতেই দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে

 

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার নাটুদায় ৮ শহীদের কবরে গার্ড অব অনার, পুষ্পমাল্য অর্পণ, কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় ৮ শহীদের কবরে পৌঁছুলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।

হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে ফুল দিয়ে বরণ করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদুর রহমান ও দামুড়হুদা থানার অফিসার্স ইনচার্জ আহসান হাবীব। এরপর নাটুদহ ক্যাম্পের এসআই আবুল হাশেমের নেতৃত্বে দেয়া হয় গার্ড অব অনার। তারপর জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন ৮ শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫ আগস্ট পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে ৮ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের কবর রয়েছে চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা ও মেহেরপুর মুজিবনগরের সীমান্তবর্তী নাটুদায়। এ সময় জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, সম্মুখযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন, আমি ও আমরা যারা বেঁচে আছি, আমাদের সকলের স্বপ্ন হতে হবে শহীদদের স্বপ্নের বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করে গড়া ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। তাহলেই তাদের আত্মা শান্তি পাবে। গোটা বাঙালি জাতির জন্য যারা নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছেন তাদের সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। এ ৮ বীর মুক্তিযোদ্ধারা কারা, কেনইবা তারা জীবন উৎসর্গ করলেন। এরপর দোয়া পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদউজ্জামান লিটু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. শামসুজ্জোহা, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক খুস্তার জামিল, উপপ্রচার সম্পাদক শওকত আলী বিশ্বাস, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা আরশাদ আলী চন্দন, বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি সালাহউদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আরেফিন আলম রনজু, যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের, জামান, বাকী, তারিক, আ. রশিদ, রুবেল, আব্দুল করিম, মোক্তার ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুবায়েত বিন আজাদ সুস্তির প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলার ৮ বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে নিহত হন। ৮ শহীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদাহ গ্রামে। পাশেই সহযোদ্ধা জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের বিশেষ উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিকমপ্লেক্স। ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের মাঠে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। এতে শহীদ হন ৮ মুক্তিযোদ্ধা। এরা হলেন- চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুর গ্রামের সিদ্দিক আহমেদের ছেলে রবিউল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা শহরের মাঝেরপাড়ার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে আবুল কাশেম, চুয়াডাঙ্গা শহরের শেখপাড়ার মৃত মহিউদ্দিন আহমেদের ছেলে আলাউল ইসলাম খোকন, আলমডাঙ্গার রোয়াকুলি গ্রামের মৃত রহিম মণ্ডলের ছেলে কিয়ামুদ্দিন, আলমডাঙ্গার গোকুলখালী গ্রামের মৃত ইয়াকুব হোসেনের ছেলে হাসান জামান, আলমডাঙ্গার বটিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে রওশন আলম, মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে আফাজ উদ্দিন ও কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর উপজেলার পোড়াদহ দক্ষিণ কাটদহ গ্রামের মৃত মহিউদ্দিন আহমেদের ছেলে খালেদ সাইফুদ্দিন আহমেদ তারিক। ৮ শহীদদের মধ্যে একমাত্র তারিককে দেয়া হয় বীরবিক্রম খেতাব। ৮ শহীদের লাশ পাকহানাদারবাহিনী চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহ মাঠে এনে দুটি গর্তে মাটি চাপা দেয়। ওই গণকবরের ওপরই এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ১৯৯৮ সালে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ একর জমির ওপর নির্মিত হয় স্মৃতিসৌধ।