ঝিনাইদহে শতাধীক চুয়াডাঙ্গায় একাধিক স্কুলছাত্রী অসুস্থ

চিকিৎসক বলছেন হাম-রুবেলা টিকার কারণে নয়, মানসিক দুর্বলতাই অসুস্থতার কারণ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহে শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৮০ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় অসুস্থ হয়ে পড়া তিন শিশুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলেও একজনকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বড়শলুয়ার বলু মণ্ডলের মেয়ে তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী লিপি খাতুনকে গতকাল হাসপাতালে নেয়া হয়। তার অভিভাবকেরা বলেছেন, গতকাল বিদ্যালয়ে হাম-রুবেলা টিকা দেয়া হয়। বাড়ি ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। শ্বাসকষ্টসহ মাথা যন্ত্রণা দেখা দিলে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার খাদিমপুরের পারকৃষ্ণপুরের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে স্কুলছাত্রী শাবানাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে নীলমণিগঞ্জ মাধ্যামিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার অভিভাবকেরাও অভিন্ন তথ্য জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টিকা দেয়ার সময় সরিষাডাঙ্গার রত্না নামের এক ৭ম শ্রেণির ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে বিদ্যালয়েই সুস্থ করে বাড়ি ফেরানো হয়। টিকা দেয়ার আগেই দশম শ্রেণির এক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকেও সুস্থ করতে হয়েছে। এখন শুনছি ৮ম শ্রেণির ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। বিষয়টি বেশ গোলমেলে। কি করে বলবো যে টিকার কারণে ওরা অসুস্থ হয়েছে? যারা অসুস্থ হয়েছে তারা হয় তো দুর্বলতার কারণেই হয়েছে।

ঝিন্ইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন সালেহা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২৮০ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়। টিকা দেয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা পর তারা অসুস্থ হতে থাকে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হাত পা অবশ হয়ে প্রথমে বুকে ব্যথা অনুভর করে, এরপর তারা একে একে বমি করতে তাকে। এ সময় তাদেরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে শিক্ষার্থীরা আসতে থাকলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভিড়ে চিকিৎসকদেরও হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসা দিতে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, দুপুরে টিকা খাওয়ানোর পর এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে শুরু করেছে চিকিৎসকরা। উদ্বেগ আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। এর আগে সোমবার জেলার হরিণাকুণ্ডুতে আরিফুল ইসলাম নামে এক শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দেয়ায় অসুস্থ হয়ে ৩ ঘণ্টা পর মারা যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। সে ঘটনায় ৪টি তদন্ত টিম কাজ করছে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাশেদ আল মামুন জানান, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। টিকা খাওয়ানোর পর এমন হলেও এটা শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা বা একজনের দেখাদেখি অন্যরা আতঙ্কিত হয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম ও সিভিল সার্জন ডা. নাসরিন সুলতানা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ছুটে যান এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. নাসরিন সুলতানা জানান, হাম-রুবেলা টিকা নেয়ার পর কোনো শিশুর অসুস্থ হওয়ার কারণ নেই। মানসিক দুর্বলতার কারণ থেকেই শিক্ষার্থীরা এ মাস সাইকোজনিক ইলনেস রোগে আক্রান্ত।