টিকাদানের ৩ ঘণ্টার মাথায় মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন : প্রকৃত কারণ জানতে তিনটি তদন্ত কমটি গঠন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভায়না মাধ্যমিক স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম মাসুম (১৩) মারা গেছে। তার এ মৃত্যু নিয়ে নানামুখি তথ্য পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, হাম ও রুবেলা টিকা দেয়ার তিন ঘণ্টার মাথায় তার মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, আরিফুল ইসলাম মাসুম টিকার কারণে নয়, সে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মারা গেছে। তবে প্রকৃত কারণ জানতে তিনটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আরিফুল ইসলাম মাসুম হরিণাকুণ্ড উপজেলার কালিশঙ্করপুর গ্রামের মোকাদ্দেস আলীর ছেলে। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে ৩টি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। শিশুটির আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট রোগ ছিলো বলে স্বীকার করেছেন পরিবারেরই এক সদস্য।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. নাসরিন সুলতানা জানান, গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ভায়না স্কুলের ৪৩৩ জন ছাত্র-ছাত্রীকে হাম রুবেলা (এমআর) টিকা দেয়া হয়। অন্য ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মাসুমকেও দেয়া হয়। মাসুম আধ ঘণ্টা বিশ্রাম নেয়ার পর বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা করতে থাকে। প্রায় দু ঘণ্টা পর মাসুম অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়। দুপুর ২টা ৫৫ মিনিটে ছেলেটিকে হরিণাকুণ্ডু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। বিকেল ৩টায় সে মারা যায়।
সিভিল সার্জন জানান, ছেলেটির বাবা তাকে জানিয়েছেন- মাসুমের অ্যাজমা (শ্বাসকষ্ট) রোগ ছিলো। ছেলের এ রোগের ওষুধ হিসেবে কনটিন ও ব্রডিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে দিয়ে রাখতেন শিশুটির বাবা। অসুস্থ বোধ করলে ছেলেকে তিনি এ ওষুধ দিতে বলেছিলেন। সিভিল সার্জন আরো জানান, টিকা দেয়ার কারণে নয়, শ্বাসকষ্ট রোগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তবে শিশুটির মৃত্যুর পর মন্ত্রণালয়ে জানালে একটি ঊর্ধ্বতন তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে সিনিয়র চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি এবং উপজেলা পর্যায়ে আরো একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে এ মৃত্যু নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। তার বাবা ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিজ দায়িত্বে ছেলের মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
অপরদিকে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় হাম-রুবেলা টিকায় এক স্কুলছাত্রী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। হতভাগ্য আফরোজা (১২) স্থানীয় প্রতাপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো। সে প্রহলাদপুর ইউনিয়নে মেন্দিপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের মেয়ে। এ ঘটনা তদন্তে গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন এবং শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পক্ষ থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।