স্টাফ রিপোর্টার: মুশফিক-সাকিব দু জনই ফিফটি পেলেন, লড়াই করলেন, কিন্তু লড়াইকে দীর্ঘায়িত করতে পারলেন না। দলের বিপদে সোহাগ গাজীও লড়লেন, ৪২ রান করে দলের সংগ্রহকে স্ফীত করতে রাখলেন অবদান, কিন্তু তিনিও প্রত্যাশার সাথে তাল মেলাতে পারলেন না। অভিষেকে শামসুর রহমান প্রতিশ্রুতি দিলেন ভালো করার, আক্রমণও শানালেন, কিন্তু টিকে থাকতে পারলেন না।
টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যত প্রশ্নে আজ যখন শুরু হচ্ছে আইসিসির সভা, ঠিক তার আগের দিন প্রথম দিনের খেলা ২৬ ওভার বাকি থাকতেই ২৩২ রানে অলআউট হলো বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের বাড়াবাড়ি রকমের শট খেলার প্রবণতা দেখে মনে হলো, কয়দিন পর থেকে শুধু ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিই যখন খেলতে হবে, টেস্টের ব্যাটিং করে আর কী লাভ! তামিম ইকবাল আর শামসুর রহমানের উদ্বোধনী জুটি অবশ্য ভালো কিছুরই ইঙ্গিতই দিচ্ছিলো। কিন্তু তাড়াহুড়োর শট খেলে তামিম ইকবালের ফেরাটাই যেন বাঁধের মুখ আলগা করে দিলো। একে একে ফিরে গেলেন মার্শাল আইয়ুব আর শামসুর। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ খেলে টেস্ট দলে নিজের জায়গা মজবুত করে ফেলা মুমিনুল হকও ব্যর্থতার পথেই হাঁটলেন। প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির মেলবন্ধন ঘটল না দেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে উত্কট উত্কণ্ঠায় থাকা ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের। লাঞ্চের আগেই বাংলাদেশ ৪ উইকেটে ৭২। মাত্র ২৪ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারিয়েছে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের ওই ৮৬ রানের জুটিই দিনের বাংলাদেশের সেরা প্রাপ্তি। ঠিক ওই সময়ই গোটা দিনের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে কিছুটা চাপের মধ্যে ফেলা গিয়েছিলো। ৯১ বলে ৯টি চারে ৫৫ রান করা সাকিব যদি আর কিছু সময় উইকেটে থাকতেন, তাহলে গল্পটা কিন্তু অন্যভাবেই বলা যেত। সাকিবের বিদায়ের পর নাসিরের শুরুটা প্রত্যয় জাগানিয়া হলেও তিনি নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
সোহাগ গাজীকে সাথে নিয়ে মুশফিক অধিনায়কোচিত লড়াইই লড়েছেন। সপ্তম উইকেটে ৫৩ রানের জুটি। পুরো ইনিংসে ফিফটি পার্টনারশিপ মাত্র দুটোই। কিন্তু সাকিব-মুশফিক জুটির মতো মুশফিক-সোহাগ জুটির পরিণতিটাও হলো লড়াইটাকে একটা পর্যায়ে নিতে যেতে না পারার ব্যর্থতার। শেষের দিকে রবিউল, রুবেল আর আল-আমিনের কাছে প্রত্যাশা ছিলো না কারোরই। সে কারণেই কিনা, দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে যাওয়ার তাগিদটা তাঁরা কেউই অনুভব করতে পারলেন না। গোটা ইনিংসটাই যেন অতৃপ্তির হাহাকার রেখে গেল বড় করুণভাবেই। দিন শেষে শ্রীলঙ্কা বিনা উইকেটে ৬০। ব্যাটিংয়ের হাহাকার যেন সংক্রমিত হলো বোলিংয়েও! সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)। বাংলাদেশ: ৬৩.৫ ওভারে ২৩২/১০ শামসুর ৩৩, সাকিব ৫৫, মুশফিক ৬১, সোহাগ ৪২। লাকমল ৩/৬৬, এরাঙ্গা ৪/৪৯। শ্রীলঙ্কা: ১৯ ওভারে ৬০/০ (সিলভা ৩০, করুনারত্নে ২৮। গতকাল সোমবার প্রথম দিনের খেলা শেষে অতিথিদের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬০ রান। এখনো ১৭২ রানে পিছিয়ে শ্রীলঙ্কা, তবে হাতে আছে ১০ উইকেটই। দিমুথ করুনারত্নে ২৮ ও কৌশল সিলভা ৩০ রানে মঙ্গলবার আবার মাঠে নামবেন।