টঙ্গীর তুরাগতীরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লির স্রোত : ৩৬ নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু আজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ধর্মপ্রাণ লাখো মুসলমানের সমাগমে পবিত্র হজের পর মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সান্নিধ্য লাভের আশায় ইজতেমায় যোগ দিতে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে এখন মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস-ট্রাক, ট্রেন ও লঞ্চযোগে লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে এসে সমবেত হচ্ছেন। মানুষের এ স্রোত আখেরি মোনাজাতের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

গত বুধবার থেকেই দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লি ইজতেমাস্থলে আসা শুরু করেছেন। মুসল্লিরা জামাতবদ্ধ হয়ে দলে দলে ইজতেমা মাঠের নির্ধারিত স্থানে (খিত্তায়) প্রয়োজনীয় মালামাল ও ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছেন। ৩ দিনব্যাপি বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আগামী ২৬ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে। আজ দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি এক জামাতে শরিক হয়ে নামাজ আদায় করবেন। আর এ বৃহৎ জুমার নামাজে শরিক হতে গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি শরিক হবেন। ইতোমধ্যে অনেকে টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় আত্মীস্বজনের বাসায় অবস্থান নিচ্ছেন।

দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মুসল্লি দূর-দূরান্ত থেকে চলে আসায় ইতোমধ্যে টঙ্গী স্টেশন রোড ও কামারপাড়াসহ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকায় মাঝে মধ্যে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে স্টেশন রোড থেকে কামারপাড়া সড়কে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমেই যানজট চলে। ইজতেমা ময়দানের উত্তর পাশের এ রাস্তাটি ব্যবহার করেই বিদেশি মুসল্লিসহ উত্তরাঞ্চলের মুসল্লিদের মূল ময়দানে প্রবেশ করতে হয়। আর এ পথে মালবাহী ট্রাক, লেগুনাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করায় এ যানজটের সৃষ্টি। মুরব্বিরা কামারপাড়া এ সড়ককে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই ট্রাকসহ পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে দুপুরের দিক ওই সড়কের এক দিক বন্ধ করে দিয়ে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

ইজতেমা মাঠের মুরব্বি মো. নূর জানান, তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের সব কাজ করা হচ্ছে পরামর্শের মাধ্যমে। এখানে বিদ্যুত, পানি, প্যান্ডেল তৈরি, গ্যাস সরবরাহ প্রতিটি কাজই আলাদা আলাদা গ্রুপের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলিগ জামাতের অনুসারী মুসলমানরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলিগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্বব্যাপি পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।

প্রথম পর্বে ৩২টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন: এবারের দু পর্বের ইজতেমায় অংশ নেয়ার জন্য পুরো ইজতেমা ময়দানকে জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া প্রথম পর্বে ৩২টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বিশাল চটের প্যান্ডেলের অভ্যন্তরে ৪০টি খিত্তায় অবস্থান নেবেন। এসব জেলা হচ্ছে ১ ও ২নং খিত্তায় গাজীপুর, ৩ থেকে ১২নং খিত্তায় ঢাকা, ১৩নং খিত্তায় সিরাজগঞ্জ, ১৪নং খিত্তায় ফরিদপুর, ১৫নং খিত্তায় নরসিংদী, ১৬নং খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ১৭নং খিত্তায় রাজবাড়ী, ১৮নং খিত্তায় শরীয়তপুর, ১৯নং খিত্তায় নাটোর, ২০নং খিত্তায় শেরপুর, ২১নং খিত্তায় দিনাজপুর, ২২নং খিত্তায় হবিগঞ্জ, ২৩নং খিত্তায় রংপুর, ২৪নং খিত্তায় লালমনিরহাট, ২৫নং খিত্তায় গাইবান্ধা, ২৬নং খিত্তায় জয়পুরহাট, ২৭নং খিত্তায় রাজশাহী, ২৮নং খিত্তায় সিলেট, ২৯নং খিত্তায় চাঁদপুর, ৩০নং খিত্তায় ফেনী, ৩১নং খিত্তায় চট্টগ্রাম, ৩২নং খিত্তায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান, ৩৩নং খিত্তায় বাগেরহাট, ৩৪নং খিত্তায় কুষ্টিয়া, ৩৫নং খিত্তায় নড়াইল, ৩৬নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ৩৭নং খিত্তায় যশোর, ৩৮নং খিত্তায় ভোলা, ৩৯নং খিত্তায় বরগুনা ও ৪০নং খিত্তায় ঝালকাঠি জেলা। এছাড়া জেলার মহানগরগুলোর জন্য আলাদা খিত্তা রয়েছে।