মেধা বিকাশে অনিয়ম শক্ত হাতেই প্রতিহত প্রয়োজন

 

গাইড বইয়েরই বৈধতা নেই, তার ওপর পুরোনো বইয়ে নতুন মোড়ক লাগানো। এ বইও বাজারে বিক্রি হতো। বিক্রি হয়। বিক্রির জন্যই চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের অদূরের একটি ঘরে চলছিলো অপকর্ম। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত দু হাজার টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডিতের অনুপস্থিতিতেই তার কর্মচারীরা দণ্ডিত অর্থ প্রদান করেন। নকল বই তৈরির কারখানা বন্ধও করে দেয়া হয়েছে।

দেশে শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়েই নয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর মাঝে নতুন বছরে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেয়া হয়। অবশ্য কিছু কিছু বিদ্যালয় নতুন পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দিতে ব্যর্থও হয়। এ ব্যর্থতার জন্য কারো কারো গাফিলতিই দায়ী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকার নয়। অবশ্য সুষ্ঠু তদারকির অভাবে এবার মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যপুস্তক সরবরাহে পরিলক্ষিত হয়েছে বিলম্ব। বিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক যখন সরকারিভাবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়, তখন গাইড বই প্রস্তুত করে বাণিজ্যের ফাঁদ কেন? তা কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধই বা করেন কারা? কৌশলেই প্রচারণা চলে, শিক্ষকদেরই কেউ কেউ কৌশলে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করেন। অথচ মেধা বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার কারণেই ওইসব নোটবুক, গাইডবুক প্রস্তুত এবং বিক্রি নিষিদ্ধ। এরপরও বাজারে এসব দেদারছে বিক্রি হয়। মাঝে মাঝে প্রশাসনের তরফে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। কোনো কোনো পুস্তক বিক্রেতার যৎসামান্য জরিমানা করা হয়। অবস্থা সেই তিমিরেই থেকে যায়।

নতুন বছরের শুরু থেকেই মূলত শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। চলছে বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি। গাইড বুকসহ বাংলা-ইংরেজি ব্যাকরণ বই বিক্রির জন্য বিক্রয় প্রতিনিধিদের উপঢৌকনের বহর দেখে চমকাতে হয়। অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষকসহ কিছু শিক্ষককে উপঢৌকন দিয়েই পছন্দ করানো হয় তাদের প্রস্তুত করা ব্যাকরণ বই। এ অনিয়মের খেসারত যেমন শিক্ষার্থীদের তথা জাতির ভবিষ্যতকে দিতে হয়, তেমনই গাইডবুকেরও কুফল পড়ে তাদের ওপরই। এসব অনিয়ম শক্ত হাতে প্রতিহত প্রয়োজন।