পরিবারের অভিভাবক সচেতন না হলে তার কুফল পড়ে সন্তানদের ওপর। সেই কুপ্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারে না সমাজ। ফলে সমাজের সচেতন মানুষগুলোকে অধিক দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। এ প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ক’জনই আর দায়িত্ব পালন করেন? অনেকেই করেন, অনেকেই করেন না। কেন করেন, কেন করেন না? তা নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি আছে অনেক। সব যুক্তিই খোড়া যদি তা না হয় সমাজের জন্য কল্যাণকর।
অবশ্যই সমাজ সুন্দর তথা সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। সমাজের অধিকাংশ মানুষ ভালো এবং শান্তিপ্রিয়। গুটি কয়েক মানুষের কারণে সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়। তাদের মাধ্যমেই সমাজে ক্ষতিকর প্রবণতা ছড়ায়। পাশের বাড়ির গৃহকর্তা মাঝে মাঝে তার স্ত্রীকে মারধর করে। প্রতিবেশী হয়েও কোনোদিন নির্যাতনের কারণ জানলেন না, সেই ব্যক্তি শিক্ষিত হলেও তাকে আর যাই হোক সচেতন দায়িত্বশীল বলা যায় না। মাকে ধরে পিতা পেটাচ্ছে, সন্তান মাকে রক্ষা করতে গিয়ে রাগের বশে পিতার মাথায় মেরে দিলো বাটাম। রক্তাক্ত জখম পিতাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করতে হলো। প্রতিবেশীরা এ ঘটনাকে নানাভাবেই ব্যাখ্যা দিতে পারেন। কেউ বলতে পারেন, ওটা ওদের পরিবারের ব্যাপার। কেউ কেউ বলতে পারেন লোকটা ওরকমই, আবার কারো কারো ব্যাখ্যা অন্যরকমও হতে পারে। যার যে ব্যাখ্যাই থাক, তা যে দায় এড়ানোরই অজুহাত তা বোদ্ধামাত্রই অস্বীকার করবেন না। ওই ঘটনাটিকে যদি পারিবারিক অশান্তির আগুন বলা যায়, তাহলে সেই আগুনের ফুলকি নিজের ঘরের চালে পড়তে কতোক্ষণ? উপলব্ধি প্রয়োজন।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। শিশুর সামনে তার পরিবারের বড়রা যেরকম আচরণ করেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই পরিবারের শিশুদের শাদা মনে তারই প্রতিফলন ঘটে। যে তার মাকে নির্যাতনের শিকার হতে দেখে, তার মানসিকতা কেমন হয়? বিষয়টি পারিবারিক হলেও তা সমাজের বাইরে নয়, পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে প্রতিবেশীদের মধ্যে যারা সচেতন তাদেরকেই এগিয়ে আসা দরকার।