কেরুজ চিনিকলে দু দিন মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ : এমডিকে ঘেরাও

দর্শনা অফিস: ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কেরুজ চিনিকল। কেরুজ চিনিকলটি এশিয়া মহাদেশের ২য় বৃহত্তর ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ব্যাপক পরিচিত। এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে কেরুজ চিনিকলের সুনাম রয়েছে ব্যাপক। মিলটি এখন চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়তে হচ্ছে মিলটিকে। এতে মাড়াই কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ফি বছরই গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এ মিলটি আধুনিকায়ন করণে ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী মরসুমে এ আধুনিকায়নের কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে। প্রায় ৩০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০১৩-১৪ আখ মাড়াইয়ের কার্যক্রম শুরু হয় গত বছরের ৬ ডিসেম্বর। মিলের মাড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ছোট-খাট যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়তে হয়েছে। তা সারিয়ে তুলতে পারলেও হঠাত করেই বড় ধরনের ত্রুটির কবলে পড়েছে মিলটি। আখ মাড়াই শুরু ৩২ দিনের মাথায় গত পরশু মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে মিলের ৪ নং বয়লারের ঝুলন্ত ছাদ ভেয়ে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় মাড়াই কার্যক্রম। বয়লারের ওপরের ইট খুলে পড়ায় দাও দাও করে জলন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে নিয়োজিত হন বেশ কয়েকজন শ্রমিক-কর্মচারী। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দিনভর সময় লাগে। ৩৪ ঘণ্টার মাথায় গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বয়লার মেরামত করে আখমাড়াই শুরু করা হলেও তা টেকেনি। মাত্র আধঘন্টার মাথায় ফের আগের দশায় পরিণত হয়। বর্তমান অবস্থায় আগের তুলনায় অনেক ভয়াবহ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই। বয়লারের সমস্যা সমাধান সারিয়ে তুলতে হিমসিম খাচ্ছে মিলকর্তৃপক্ষ। কবে নাগাদ সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি মিলকর্তৃপক্ষ।

এদিকে মিলের আখমাড়াই বন্ধ হওয়ায় মিলগেটে আখ নিয়ে আসা চাষিদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর চাষিকূল ক্ষিপ্ত হয়ে আখ ওজন নেয়ার দাবিতে গত পরশু মঙ্গলবার বিকেলে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ঘেরাও করে। চাষিদের দাবির মুখে আখ ওজন নেয় মিল কর্তৃপক্ষ। একই অবস্থায় হয় গতকাল বুধবার দুপুরে। ফলে দু দিনের আখ ওজন নিয়ে ফেলা রাখা হয়েছে খোলা আকাশের নিচে মাটিতে। আখ মাটিতে পড়ে রোদে শুকাচ্ছে। এতে চিনি আহরণের হার কমতে পারে বলে বিশেজ্ঞরা মন্তব্য করেছে। যার কারণে চলতি মাড়াই মরসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সচেতনমহল অভিমত ব্যক্ত করে বলেছে, দক্ষতার অভাবেই মিলের যান্ত্রিক ত্রুটি একটি অংশ। অদক্ষ লোকবলের কারণে সব ধরনের ত্রুটি সারিয়ে তুলতে নাকানি-চুবানি খেতে হয় মিল কর্তৃপক্ষকে।