রায় আজ

স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৪-এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিরোধীদল বিএনপিসহ সমমনা দলের ডাকা হরতাল কর্মসূচি চলাকালে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন নিরীহ দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস। এ সময় তারা প্রকাশ্যে বিশ্বজিৎকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ও রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।  টেলিভিশনের পর্দায় লোমহর্ষক এ ঘটনা দেখে দেশে-বিদেশে আলোচনা, সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় ওঠে। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার এক বছরের বেশি সময় পর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। এ ঘটনায়  এখন পর্যন্ত ৮ জন আসামি কারাগারে থাকলেও ১৩ জন আসামি পলাতক। আইনানুযায়ী গ্রেফতারকৃত আসামিদের উপস্থিতি ও পলাতকদের অনুপস্থিতিতেই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) আশা করছেন নিহত বিশ্বজিতের স্বজন ও আইনজীবীরা। তবে পলাতক আসামিরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। বিশ্বজিতের পিতা অনন্ত দাস বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করছে তাদের ফাঁসি চাই। এখন আদালতের বিবেচনা। এ বিষয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৪-এর পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর)  মো. রফিকুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, আশা করছি রায়ে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি এ হত্যা মামলায় যারা পলাতক তারাও গ্রেফতার হয়ে বিচারের আওতায় আসবে। বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনার দিন রাতেই সূত্রাপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল আহমেদ। এছাড়া ১৩ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আরেকটি অনিয়মিত মামলা দায়ের করেন। ১৯ ডিসেম্বর গ্রেফতারকৃত আসামি রফিকুল ইসলাম শাকিল, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, এমদাদুল হক এমদাদ, মাহফুজুর রহমান নাহিদ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জনগুরুত্ব বিবেচনা করে চলতি বছরের ১৩ জুন মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ পাঠানো হয়।

হত্যাকাণ্ডের ২ মাস ২৪ দিন পর ৫ মার্চ ২১ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট)  দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযোগপত্রভুক্ত ২১ আসামির মধ্যে কারাগারে আটক আসামিরা হলেন, রফিকুল ইসলাম শাকিল (চাপাতি শাকিল), গোলাম মোস্তফা, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, এইচএম কিবরিয়া, কাইউম মিয়া টিপু ও সাইফুল ইসলাম। বাকি ১৩ জন ঘটনার পর থেকেই পলাতক। এরা হলো রাজন তালুকদার, খন্দকার মো. ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন ইমরান, আজিজুর রহমান আজিজ, মীর  মো. নূরে আলম লিমন, আল-আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেন। অভিযুক্তরা সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।