স্টাফ রিপোর্টার: সিএমএইচে বন্দি সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বললেন, এ কোন দেশে আছি! আমি নির্বাচনে যাবো না এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। কেন নির্বাচনে যাবো না সেটাও বলেছি। পাতানো এবং একতরফা নির্বাচন দেশের জন্য কোনো উপকারে আসবে না। সেটা কাকে বোঝাবো? প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলাম। নির্দেশ দিলাম দলীয় নেতাকর্মীদের। তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলো। নির্বাচন কমিশন বললো, প্রত্যাহার করা যাবে না। এমনকি আমার নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে চিঠি দিলাম। সেটাও গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রার্থিতা প্রত্যাহার হবে না। কীভাবে বললে হবে, তা-ও তারা বলেনি। এ কমিশন কি করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে। তারা তো প্রাথমিক পরীক্ষায় ফেল করেছে। অতীতে এমন রেকর্ড কোনো কমিশন স্থাপন করতে পারেনি। গতকাল রোববার সকালে এরশাদ নিজেই ঢাকার একটি সংবাপত্রকে জানান, নিজের কথা আর কি বলবো। আমি সুস্থ মানুষ, আমাকে অসুস্থ বানিয়ে রাখা হয়েছে। আমাকে আটকে রেখে দল ভাঙার চেষ্টা চলছে। যতো চেষ্টাই তারা করুক না কেন, তাতে কোনো লাভ হবে না। দলের নেতাকর্মীরা আমার সাথে। যতো প্রলোভন আর ভয়ভীতি দেখানো হোক না কেন নেতাকর্মীরা তা উপেক্ষা করবে। দেশবাসী দেখছে। জনগণ এতো বোকা নয়। আমার কি অপরাধ? আমি নির্বাচনে যাবো না এটা আমার সিদ্ধান্ত। সরকার কেন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবে? বলপূর্বক আমাকে এমপি বানাবে? সরকার কেন বুঝতে পারছে না যে তাদের কোনো কৌশলই কাজে আসবে না? তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। তারা এখন জনবিচ্ছিন্ন। হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে। এরশাদ বললেন, বাইরে থাকলে অনেক কিছুই বলতে পারতাম। তবুও সংবাদ মাধ্যমকে বলছি, আমাকে হাস্যকর কায়দায় এমপি বানিয়ে দেয়া হয়েছে। তাতে কি? আমি তো শপথ নিতে যাচ্ছি না। দলের অন্যদের বেলায় কি সিদ্ধান্ত? তাদের নির্দেশ দিয়েছি তারা যেন শপথ নিতে না যায়। এ জন্য তাদের ওপর চাপ আসতে পারে। তাতে কি? রাজনীতি করলে চাপ সইতেই হবে। আমি তো এ বয়সে আত্মসমর্পণ করিনি। আমার শেষ কথা। কোনো আপস নয়। জনগণের সাথে ছিলাম। আছি, থাকবো।
এরশাদকে দেখতে হাসপাতালে রিজভী: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেখতে সিএমএইচে যান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সপরিবারে রিজভী সেখানে যান। এ সময় তিনি এরশাদের খোঁজখবর নেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদও এসময় তাদের সাথে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে এরশাদকে তার বারিধারার বাসা থেকে র্যাব আটক করে সিএমইচএ নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি সেখানে রয়েছেন। এরশাদ নিজেই দাবি করেছেন তাকে আটক রাখা হয়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি। এরশাদকে নির্বাচনে আনার জন্য আওয়ামী লীগের দু নেতা তার সাথে বৈঠক করেছেন বলে আলোচনা ছিলো। কিন্তু এরশাদ তা নাকচ করে দেন। রিজভীর সাক্ষাতের ওই ছবি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।
অপরদিকে ঢাকার অপর একটি সংবামাধ্যম পৃথক সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, আমি নির্বাচনে নেই-মুখে এমন কথা বললেও বাস্তবে নির্বাচনে পুরোদমে সক্রিয় জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ। ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) থেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তিনি। একইসাথে স্ত্রী ও দলের জ্যেষ্ঠ প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম রওশন এরশাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন