অবরোধ শেষ হলেও দূরপাল্লার কোচ চুয়াডাঙ্গা থেকে ছাড়ার বিষয়টি অনিশ্চিত
স্টাফ রিপোর্টার: যুদ্ধাপরাধী আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হওয়ার পরে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক রাখা হয়েছে। এ নিয়ে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সে জন্য গোয়েন্দা নজরদারি কয়েক ধাপ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নাশকতা এড়াতে সারাদেশে ট্রেনযোগাযোগ স্থগিত করে রাখা হয়। সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে নির্বাচন কমিশন।
চুয়াডাঙ্গার পরিবহন সংস্থার বেশ কয়েকজন মালিক ও চালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন, শুক্রবার সকালে অবরোধ শেষ হলেও আমরা দূরপাল্লার গাড়ি নিয়ে রওনা হবো কি-না তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বুঝেই শুক্রবার ঢাকার উদ্দেশে কোচ ছাড়া হবে কি হবে না তা চূড়ান্ত করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বড়দিন ও নতুন বছরের প্রথম প্রহর উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. শামসুল হক টুকু। তবে তিনি কাদের মোল্লার রায় কবে কার্যকর করা হবে সে বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক আবদুল আজিজ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাইন উদ্দিন খন্দকার, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শহিদুল হক, র্যাব মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের নাশকতা ঠেকাতে কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে টুকু বলেন, আমি এ বিষয় নিয়ে সভা করেছি। সভার বাইরে কিছু বলব না। তবে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটে দেশের সব গীর্জা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে। সম্প্রতি দু বিচারপতি এসকে সিনহা এবং ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের বাড়িতে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। যারা সারাদেশে যেখানে সেখানে নাশকতা সৃষ্টি করছে, জনগণকে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করতে হবে। বড়দিন ও নতুন বছরের প্রথম প্রহরে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি না দিতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে। কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ এবং বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত ছিলগালা করা হয়েছে। আখাউড়া সীমান্তের ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ জারি করেছে ১৪৪ ধারা। এ সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। এ অবস্থায় সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে বিজিবি ও বিএসএফ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। সীমান্ত এলাকার মানুষের ওপর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আক্তার ইকবাল বলেন, সীমান্তে কোনো প্রকার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড কিংবা কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। ভারতীয় বিএসএফও সীমান্ত এলাকায় সর্বদা সতর্ক পাহাড়ায় রয়েছে।