আসমানখালী বাজারে মহিলা জামায়াতের মিছিল দেখে প্রশ্ন তুলতেই দু দোকানির বাগবিতণ্ডা মারপিট
স্টাফ রিপোর্টার: রাজনৈতিক হিংসার আগুনে আলমডাঙ্গা হাঁপানিয়ায় আওয়ামী লীগের ৬ জন দগ্ধ হয়েছে। গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে বেল্টুর দোকানে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে বেল্টুর দোকান ভস্মীভুত হয়। আগুনে দগ্ধ ৬ জনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এর মধ্যে ইন্তাদুল ও মিনারুলের অবস্থা গুরুতর।
অগ্নিদগ্ধ ৬ জন বলেছে, তাদের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। অপরদিকে স্থানীয় একাধিকসূত্রসহ দোকানির তরফে বলা হয়েছে, সার কীটনাশক ও তেলের দোকানে আগুন দেয়ার সময় ছড়িয়ে পেট্রোলে ওরা দগ্ধ হয়ে ওখন উল্টো পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে।
অগ্নিদগ্ধরা হলেন, হাঁপানিয়ার মৃত মহাব্বত আলীর ছেলে ইন্তাদুল (৩৫), ইসমাইল হোসেনের ছেলে খোকন (২৫), খোয়াজ আলীর ছেলে মিনারুল ইসলাম (২৮), গোলাম মোস্তফার ছেলে আতিকুল্লাহ (২২), ইয়াছদ্দিন মণ্ডলের ছেলে হাসিবুল (২০) ও ইদ্রীস আলীর ছেলে গফুর (৩০)। যে দোকানটি পুড়েছে তার মালিক হাঁপানিয়া গ্রামেরই রেজাউল ইসলামের ছেলে বেল্টু। সে জামায়াত সমর্থক। দোকানটি পুড়ে ভষ্মিভুত হয়েছে।
এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, গতকাল সোমবার হাঁপানিয়া থেকে জামায়াতে ইসলামীর মহিলদের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি আসমানখালী বাজার পরিদর্শন কালে আসমানখালী বাজারের দু দোকানি একরামুল হক ইকরা ও রকির মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। ইকরা আওয়ামী লীগ সমর্থক। আর রকি বিএনপি সমর্থক। ইকরা মহিলাদের মিছিল দেখে প্রশ্ন তোলে, কোন হাদিসে মহিলাদের রাস্তায় বের করার কথা আছে? মহিলাদের রাস্তায় নামিয়ে এ আবার কোন রাজনীতি? এ প্রশ্নের জবাব দিতেই রকির ওপর হামলা শুরু হয়। একই সাথে মিছিলটি ধাওয়া করা হয়। রকি মোচাইনগর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখঅ হয়েছে। এরই জের ধরে হাঁপানিয়া গ্রামে সন্ধ্যার পর উত্তেজনা তীব্রতর হয়ে ওঠে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক রেজাউল ইসলামের ছেলে বেল্টুর দোকানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। দ্রুত সরে পড়ে বেল্টু রক্ষা পেলেও হিংসার আগুনে দগ্ধ হয় ৬ জন। এরা সকলেই আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থক। এদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় আহত এবং আহতদের সাথে থাকা লোকজন বলেন, তারা দোকানের সামনে বসে আলোচনা করছিলো। এ সময় বিদ্যুত চলে যায়। তখনই জামায়াতের লোকজন আমাদের দিকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। আগুন আমাদের গায়ে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। মেহেরপুর গাংনী ক্যাম্প থেকে র্যাব সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেনি। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে র্যাব’র এক সদস্য বলেন, আগুন দিতে গিয়েই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করলে অবশ্যই প্রকৃত চিত্র ফুঁটে উঠবে। এদিকে চিৎলা ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান ঘটনার পরপরই বলেছেন, পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের ৬ জনকে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে মারার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। অপরদিকে বিএনপি বা জামায়াতের তেমন কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় যুবদলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, হামলা চালাতে গিয়ে নিজেরাই দগ্ধ হয়ে এখন উল্টো অভিযোগ তুলছে। গ্রামাবাসী এ ঘটনার নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত চায়।