অবশ্যই ক্ষমা করা মহৎ গুণ। কিন্তু এমন কিছু অন্যায় আছে যা ক্ষমার অযোগ্য। যেমন খুন। খুন করে খুনি পার পেলে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যায়। মূলত সে কারণেই খুনির সাথে আপসের সুযোগ দেশের প্রচলিত আইনে রাখা হয়নি। যদিও আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কেউ কেউ অপরাধীর প্রতি দরদী হয়ে অথবা প্রভাবিত হয়ে তথ্য গোপন বা কৌশলী হন। কেউ কেউ ভয়েও সঠিক তথ্য দিতে চান না। এসবের কারণে সমাজ থেকে আশাতীতভাবে অপরাধ প্রবণতা দূর হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গোষ্টবিহারের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে নাজমা সংগ্রামী নারী ছিলেন। তিনি পরিশ্রম করেই ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে চেয়েছিলেন। পাড়ি জমিয়েছিলেন রাজধানীতে। কাজ জুটিয়ে নিয়ে পরিশ্রম করেই সচ্ছলতার পথে হাঁটছিলেন। পরিচয় হয় আসাদের সাথে। বিয়ে করে। সংসার পাতে। সংগ্রামী নারী নাজমা ঢাকাস্থ স্বামীর বাসায় লাশ হয়। লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আসাদকে ধরতে না পেরে তার একভাইকে আটক করে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। লাশ নিয়ে নাজমার পিতার গ্রামে দাফন করা হয়। লাগাতার অবরোধের কারণে ঢাকায় ঘাতকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে না পেরে নাজমার পিতা-মাতা ক্ষোভের আগুনে জ্বলতে থাকে। এসব বিষয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরই একদিন পর আসাদ হাজির হয় নাজমার শোকার্ত পিতা-মাতার জীর্ণকুটিরে। আসাদ কীভাবে তার স্ত্রী নাজমাকে হত্যা করেছে তার বর্ণনা দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে চায় বলে জানায়। নাজমার হতদরিদ্র পিতা-মাতা আত্মস্বীকৃত হত্যাকারীকে নিয়ে খানেকটা বিপাকেই পড়েন। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
আসাদ তার স্ত্রীকে বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই হত্যা করেছে। হত্যার মতো অপরাধের ক্ষমা করার সুযোগ কি নাজমার পিতা-মাতা বা নিকটাত্মীয় স্বজনের আছে? আইনানুযায়ী নেই। তা ছাড়া প্রায়শ্চিত্তই যদি করতে চায় তা হলে নাজমার বাড়িতে কেন? আসাদ ঘাতক, সে কেন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলো না? স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করার পর তাকে নিয়ে বিড়ম্বনার তো কারণ নেই! স্বীকারোক্তি দেয়ার সাথে সাথে তাকে পুলিশে দেয়াটাই বিধেয়।